close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নেতানিয়াহু আমাদের শ*ত্রু, তাকে ব*ন্দি করা উচিত: ইসরা*য়েলের সাবেক সেনা*প্র*ধান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এবার সরাসরি ‘শত্রু’ আখ্যা দিলেন দেশের সাবেক সেনাপ্রধান ড্যান হালুৎজ। বললেন, “নেতানিয়াহুকে জেলে পাঠানো উচিত।” এই বিস্ফোরক মন্তব্য দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক ও উ..

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযান ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে এবার নিজ দেশের শীর্ষ রাজনীতিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইসরায়েলের সাবেক সেনাপ্রধান ড্যান হালুৎজ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন— “বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই দেশের শত্রু, তাকে বন্দি করা উচিত।”

সোমবার রাতে তেল আবিবভিত্তিক জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল ১২-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হালুৎজ বলেন, “এই ব্যক্তি শুধু নিজের স্বার্থে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সিদ্ধান্তের কারণে শুধু ফিলিস্তিন নয়, ইসরায়েলিরাও আজ চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। আমরা যাকে নেতা ভেবেছি, সে এখন এই রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “নেতানিয়াহু শত্রু। শত্রুকে মোকাবিলা করতে হয়—তাকে বন্দি করা উচিত, তবে হত্যা নয়।”


‘ব্যর্থ’ সেনাপ্রধানের কণ্ঠে ‘চরমপন্থা’— লিকুদের প্রতিক্রিয়া

হালুৎজের এই বক্তব্য সামনে আসার পরপরই দেশটির ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, “ড্যান হালুৎজ ছিলেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ চিফ অব স্টাফ। তিনি এখন জনগণের নির্বাচিত নেতাকে ‘শত্রু’ আখ্যা দিয়ে গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছেন।”

লিকুদ দলের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয় বরং সমাজে চরমপন্থীদের উসকে দেওয়ার এক সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা। একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন উস্কানিমূলক মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”


গাজা যুদ্ধ, রাজনৈতিক সংকট ও ‘আভ্যন্তরীণ যুদ্ধ’

এই বিতর্ক তখনই সামনে এলো যখন গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দমনমূলক অভিযান নতুন মাত্রায় প্রবেশ করেছে। টানা ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যদিও জানুয়ারিতে এক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, কিন্তু মার্চ থেকে আবার নতুন করে বোমা বর্ষণ শুরু হয়েছে গাজায়।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজা ইস্যু এখন শুধু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নয়, বরং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বড় সংকট তৈরি করেছে। বিভিন্ন সামরিক কর্মকর্তা, সাবেক সেনা সদস্য এবং সাধারণ নাগরিকরা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন—“এই যুদ্ধ কি আদৌ প্রয়োজন ছিল?”

বিশেষ করে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবি ও যুদ্ধ থামানোর পক্ষে সারা দেশে প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছেন অনেক প্রভাবশালী নাগরিক, যার মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর সাবেক উচ্চপদস্থরাও।


নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত?

ড্যান হালুৎজের এই বক্তব্য শুধু তাৎক্ষণিক উত্তেজনার জন্ম দেয়নি, বরং নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলেছে। দেশের ভেতরে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ, যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন, আন্তর্জাতিক চাপ এবং অর্থনৈতিক সংকট মিলে ইসরায়েল এখন এক গভীর রাজনৈতিক জটিলতার মধ্যে রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “যদি এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয় এবং জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়ে, তাহলে নেতানিয়াহুর অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। হালুৎজের বক্তব্য হয়তো এখনই বড় কোনো রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা নয়, তবে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে—শুধু সময়ের অপেক্ষা।”


উপসংহার

ইসরায়েলের ইতিহাসে এমন সময় খুব কমই এসেছে, যখন একজন সাবেক সেনাপ্রধান দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘শত্রু’ আখ্যা দিয়েছেন। ড্যান হালুৎজের এ মন্তব্য রাজনৈতিক পরিণতির পাশাপাশি নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে। গাজায় যখন রক্তপাত চলছে, তখন ইসরায়েলের ভেতরেও যেন আরেক ‘যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গেছে—রাজনৈতিক যুদ্ধ।

कोई टिप्पणी नहीं मिली