close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

নারী এশিয়ান কাপে ভালো করলে বিশ্বকাপের টিকিটও মিলতে পারে ঋতুপর্ণাদের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঋতুপর্ণাদের ঐতিহাসিক জয় এনে দিল নারী এশিয়ান কাপে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা। এবার বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক—দুটি বড় মঞ্চে সুযোগ বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে।..

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য এটা শুধুই একটি জয় নয়, বরং একটি ইতিহাস। দেশের মাটিতে কিংবা বিদেশে—সবখানেই বারবার অবহেলিত এই মেয়েরা এবার নিজেরাই প্রমাণ করলো তারা কেবল খেলতে জানে না, বরং লড়তেও জানে। মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্বে টানা দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণা চাকমার অনবদ্য দুই গোলে স্বাগতিকদের হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ‘সি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েই বাংলাদেশ জায়গা করে নেয় ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে।

১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো শুরু হয় নারী এশিয়ান কাপ। সেই শুরু থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২০টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতদিন ধরে বাংলাদেশ কখনো মূলপর্বে খেলতে পারেনি। এবারই প্রথম সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। ইতিহাসে ২৩তম দল হিসেবে নাম লেখাল বাংলাদেশ। এর আগেই চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া মূলপর্বে জায়গা করে নেয়। আর বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথম দল হিসেবে মূলপর্বে উঠলো বাংলাদেশ।

এই এশিয়ান কাপই কাজ করবে ২০২৭ নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হিসেবে। ২০২৭ সালের আসর বসবে ব্রাজিলে। সেই বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে পারবে এশিয়ার সেরা ছয়টি দল। যারা এশিয়ান কাপে সেমিফাইনালে উঠবে তারা সরাসরি পাবে বিশ্বকাপের টিকিট। তবে এখানেই শেষ নয়। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়া চারটি দল খেলবে দুটি প্লে-ইন ম্যাচ। সেখান থেকে জয়ী দুই দল পাবে বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ। আর যারা সেই ম্যাচেও হারবে, তারা পাবে ‘আন্ত-মহাদেশীয় প্লে-অফ’ খেলে বিশ্বকাপের জন্য শেষ সুযোগ।

বাংলাদেশ যদি কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত উঠতে পারে, তবে সম্ভাবনা তৈরি হবে বিশ্বকাপ খেলার। এমনকি প্লে-ইন ম্যাচ জিতলেও বিশ্বকাপের টিকিট মিলতে পারে।

২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ এবার শুধু বিশ্বকাপ নয়, ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের বাছাইপর্ব হিসেবেও কাজ করবে। টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানো আটটি দল অলিম্পিক বাছাইপর্বে খেলবে। সেখানেও দুই গ্রুপ ভাগ করে হবে খেলা। দুটি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি খেলবে অলিম্পিকে। বাংলাদেশ যদি কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে পারে, তাহলে অলিম্পিকের মঞ্চেও লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ তৈরি হবে।

২০২৬ সালের নারী এশিয়ান কাপ অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি ভেন্যুতে—সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্টার্ন সিডনি স্টেডিয়াম, গোল্ড কোস্ট স্টেডিয়াম, পার্থ রেকটাঙ্গুলার স্টেডিয়াম ও পার্থ স্টেডিয়াম। মূলপর্বের ড্র হবে ২৯ জুলাই সিডনির টাউন হলে। ১২টি দল থাকবে তিনটি গ্রুপে। প্রতিটি গ্রুপে থাকবে চারটি করে দল।

অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ গ্রুপে থাকবে স্বাগতিক হিসেবে। বাকি ১১ দলকে ফিফা র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী চারটি পটে ভাগ করা হবে। ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশকে রাখা হতে পারে চতুর্থ পটে।

১২টি দল তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে গ্রুপ পর্ব খেলবে। তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও সেরা তৃতীয় দুই দল মিলিয়ে মোট ৮ দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। এরপর সেমিফাইনাল ও ফাইনালের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে চ্যাম্পিয়ন।

এই পর্ব থেকেই নির্ধারিত হবে কারা যাবে বিশ্বকাপে এবং কারা পাবে অলিম্পিক বাছাইপর্বে খেলার সুযোগ। তাই প্রতিটি ম্যাচ হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য এটা শুধু একটি অর্জন নয়—এটা হলো এক নতুন পথচলা। বিশ্বকাপ আর অলিম্পিকের মঞ্চে ওঠার স্বপ্ন এখন আর শুধু স্বপ্ন নয়, বরং বাস্তবতার খুব কাছাকাছি। শুধু দরকার আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া, আরও একবার নিজেদের প্রমাণ করা।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator