close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

‘নামটা যদি তালিকায় উঠিয়ে দিতেন’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে বাঁ পায়ে গুলি লেগেছিল গার্মেন্টসকর্মী মো. শামীম মিয়ার (৩২)। সেই গুলি অপসারণ করা গেলেও এখনো হাঁটতে পারছেন না তিনি। ব
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে বাঁ পায়ে গুলি লেগেছিল গার্মেন্টসকর্মী মো. শামীম মিয়ার (৩২)। সেই গুলি অপসারণ করা গেলেও এখনো হাঁটতে পারছেন না তিনি। বাড়িতে বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। অভাবের সংসারে এখন প্রতিদিন ড্রেসিং ও ওষুধ কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে পরিবার। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না শামীম। শামীম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হুনছি সরকার চিকিৎসা ও সাহায্য দিব, তাই আপনেরা যদি (এ প্রতিনিধি) একটু লেইখ্যা সরকারের তালিকায় আমার নামডা উডাই দিতাইন, তাহলে পঙ্গু অইয়াও বাঁইচ্যা থাকতাম’—এমন এক আশা করে আহত শামীম গতকাল শুক্রবার নিজ ঘরের বিছানায় শুয়ে থেকে এমন কথাগুলো বলেন। শামীম মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার আমোদাবাদ কান্দাপাড়া মহল্লায়। তিনি ওই মহল্লার হাদিস মিয়ার ছেলে। গতকাল দুপুর ১টার দিকে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির অন্ধকার একটি কক্ষে শুয়ে আছেন শামীম। তাঁর বাঁ পায়ের ঊরুতে ব্যান্ডেজ বাঁধা ও ঊরু থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত মাংস ভেদ করে স্টিলের আংটা লাগানো রয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। স্বামী ও স্ত্রী মিলে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন শামীম মিয়া। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন তুঙ্গে ওঠে তখন কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। বাসায় দিন কাটছিল। গত ৫ আগস্ট সকালে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন শামীম। গাজীপুরের মাওনা এলাকায় তখন পুলিশ গুলি ছুড়ছিল। আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিচ্ছিল। এমন একসময়ে বাঁ পায়ের ঊরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। সেই সময় থেকে জমিজমা বিক্রি করে নানা হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেকার অবস্থায় দিন কাটছে শামীম মিয়ার। শামীম জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এলাকায় অবস্থিত এস এম গ্রুপের একটি পোশাক কারাখানায় কাজ করেন। তিনি বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে অচেতন হয়ে যান। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি ছেঁচড়িয়ে নিজেকে একটি গলিতে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে ছাত্ররা উদ্ধার করে মাওনার আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ছাত্ররা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতাল তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরদিন তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে রাজধানীর ডক্টরস চেম্বারস অ্যান্ড ডায়াগস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। তাঁর বাবা জমিজমা বিক্রি করে দুই লাখ টাকা খরচ করে পায়ের চিকিৎসা করান। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করে তাঁর পা রক্ষা করেন। এখন বেকার অবস্থায় বাড়িতে রয়েছেন। প্রতিদিন দুই হাজার টাকার ওষুধপত্র লাখছে। শামীম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আমি উপার্জনক্ষম ছিলাম। এখন বেকার অবস্থায় দিন কাটছে আমার। তাই দুই সন্তানকে গ্রামের বাড়িতে রেখে স্ত্রীকে কর্মস্থলে পাঠিয়েছেন।’ আহত শামীম মিয়ার বাবা হাদিস মিয়া বলেন, ‘আমি যে কিবায় কী করবাম, বুঝতাম পারতাছি না। নিজেই খাইয়া না খাইয়া থাকতাম, অহন ছেড়াডার এই অবস্থায় আমি দিস হারাইয়া ফেলছি।’
Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator