close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নড়াইলে এইচএসসি পরীক্ষা ভুল সেটে গ্রহণ, কেন্দ্র সচিবসহ দুজনকে প্রত্যাহার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নড়াইলে ভুল সেটে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা। শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, অভিভাবকদের বিক্ষোভ। কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসার বরখাস্ত, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন নিয়ে বোর্ডের বিশেষ ঘোষণা।..

নড়াইলের লোহাগড়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় এক চরম প্রশাসনিক গাফিলতির ঘটনা ঘটেছে। নির্ধারিত সেট অনুযায়ী পরীক্ষা না নেওয়ায় ছাত্র-অভিভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। বোর্ড থেকে নির্দেশনা ছিল পরীক্ষাটি ৪ নম্বর সেটে গ্রহণ করার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ভুলবশত ২ নম্বর সেটে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে এবং সেই সেটেই পরীক্ষা নেয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে বাইরে এসে অন্যান্য কলেজের পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গিয়ে জানতে পারেন যে, তাদের প্রশ্নপত্রের সেট আলাদা ছিল। এ থেকেই মূলত বিভ্রান্তির সূচনা হয়। শিক্ষার্থীদের মুখে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর অভিভাবকদের মধ্যেও সৃষ্টি হয় আতঙ্ক ও ক্ষোভ। এরপরই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভিড় জমান পরীক্ষাকেন্দ্রে এবং খোঁজ নিতে শুরু করেন প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে।

সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস এবং ট্যাগ অফিসার লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের দায়িত্বে ছিল পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার। কিন্তু এমন গুরুতর গাফিলতির জন্য দুই কর্মকর্তাকেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যশোর শিক্ষা বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে।

বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেটাই তাদের প্রথম অগ্রাধিকার। যেহেতু ২ নম্বর সেটেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, তাই শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নও হবে সেই সেট অনুসারে। যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আব্দুল মতিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের যেন কোনো ধরনের শাস্তি না পেতে হয়, তা আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এই ঘটনায় যাদের দায়িত্বে গাফিলতি প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তীতে আরো কঠোর নজরদারির কথা ভাবা হচ্ছে।”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার কেন্দ্র সচিব কাজল কুমার বিশ্বাসকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু রিয়াদ জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এমন ভুল হতেই পারে না যেখানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জড়িত। তিনি জানান, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি যশোর বোর্ডকে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে।

এই ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান জানান, পরীক্ষার পর জানতে পারি আমরা ভুল সেটে পরীক্ষা দিয়েছি। এরপর থেকে চিন্তায় পড়ে গেছি—আমাদের খাতা কীভাবে মূল্যায়ন হবে?

এমন ঘটনায় যেখানে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে পড়েছে, সেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয়ভাবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর মনিটরিং, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং সুষ্ঠু সমন্বয়ের আহ্বান জানাচ্ছেন অভিভাবক মহল।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator