close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

‘মুখ ফসকে’ ইসরায়েলের বিপক্ষে বক্তব্য দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মুখ ফসকে ইসরায়েলকে বললেন সন্ত্রাস ও দুর্ভোগের কারণ! পরে ব্যাকফুটে গিয়ে দিলেন ইরানের ঘাড়ে দোষ। কিন্তু ততক্ষণে কূটনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়েছে বিস্ফোরণ। ..

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ঘটে গেল এক কূটনৈতিক বিপর্যয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি ডরোথি শে মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন এমন কিছু, যা কল্পনাতীত ছিল মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য। তিনি প্রকাশ্যেই বলেন, “ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস ও দুর্ভোগ ছড়াচ্ছে।”
এই একটি বাক্যেই যেন কেঁপে উঠেছে জাতিসংঘের সভাকক্ষ, স্তব্ধ হয়ে যায় চারপাশ। কীভাবে মার্কিন কূটনীতিক, যার দেশ সবসময় ইসরায়েলের পক্ষে থাকে, সে-ই এমন স্পষ্ট অভিযোগ তুললেন?

ডরোথি শে সঙ্গে সঙ্গে নিজের বক্তব্য সংশোধন করেন এবং বলেন, “আমি আসলে বলতে চেয়েছি, ইরান মধ্যপ্রাচ্যে এই বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী। ইসরায়েল নয়।” কিন্তু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য হঠাৎ করে মুখ ফসকে এলেও তা নিছক ‘ভুল’ নয়। বরং, এতে ফুটে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে-ভেতরে তৈরি হওয়া এক বিতর্ক—যা এতদিন প্রকাশ্যে আসেনি।

ডরোথি শের বক্তব্যে প্রথমে মুহূর্তের জন্য জাতিসংঘের সকল রাষ্ট্রদূতরা হতচকিত হয়ে পড়েন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাদের রিপোর্টে জানায়, “এই মুখ ফসকানো এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত—যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিক তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনেছেন।”

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ইসরায়েলের পক্ষে জোরালোভাবে অবস্থান নেয়। এমনকি ফিলিস্তিন ইস্যু বা গাজা উপত্যকার সহিংসতায়ও যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত ইসরায়েলকে দায়মুক্ত রাখে। সেই জায়গা থেকে রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্য যেন আমেরিকার আনুষ্ঠানিক অবস্থানের ঠিক উল্টো।

বিভিন্ন বিশ্লেষকের মতে, ডরোথি শের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ইসরায়েল নিয়ে ক্রমবর্ধমান অস্বস্তির ইঙ্গিত মিলছে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, “হয়তো এই মন্তব্য ছিল একজন কূটনীতিকের অজান্তে ফাঁস হয়ে যাওয়া মনের কথা—যা অনেক দিন ধরে জমে ছিল, কিন্তু মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।

বক্তব্যের কয়েক সেকেন্ড পরেই রাষ্ট্রদূত শে বলেন, আমার বক্তব্য ছিল, ইরানই এই অঞ্চলে অস্থিরতা এবং সহিংসতার কেন্দ্রবিন্দু। ইসরায়েল নয়। আমি আমার ভাষা সংশোধন করছি।
তবে এতেও বিতর্ক থামেনি। কারণ, ভিডিও এবং শব্দ রেকর্ডিং ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এই ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয়, বিশ্ব কূটনীতি কেবল মিটিং বা বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—একটি ভুল শব্দ, একটিমাত্র বাক্যও হয়ে উঠতে পারে কূটনৈতিক ভূমিকম্পের কারণ।

‘মুখ ফসকানো’ শব্দবন্ধটি আজ হয়তো ডরোথি শে-র জীবনে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। কিন্তু তাতে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের চিরায়ত মধুরতা কি কোনো ফাটল ধরবে? নাকি এটিই ভবিষ্যতের নীরব পরিবর্তনের সূচনা? উত্তর সময়ই দেবে।

Keine Kommentare gefunden