মোদি সমর্থকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছেন মামদানি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মামদানি গাজা ও ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে বরাবরই সোচ্চার। তিনি অযোধ্যায় হিন্দু উগ্রবাদীদের বাবরী মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণের বিরোধিতায় ২০২০ সালে টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভেও অংশ নিয়েছিলেন।..

গত ২৪ জুন ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে উত্থান শুরু হয়েছে জোহরান মামদানির (Zohran Mamdani)। বাবা উগান্ডার নাগরিক ও মায়ের সূত্রে দক্ষিণ এশীয়/ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই প্রগতিশীল নেতার জয় মার্কিন রাজনীতিতে নতুন চমক সৃষ্টি করলেও, তাঁর স্পষ্টভাষী অবস্থানের কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক এবং কট্টর হিন্দুদের মধ্যে তীব্র বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে।

৩২ বছর বয়সী জোহরান মামদানি তাঁর প্রচারণার শুরু থেকেই তীব্র বিদ্বেষ পাশ কাটিয়ে চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করেছেন। বাবার সূত্রে তিনি আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ও উগান্ডা-মার্কিন দ্বৈত নাগরিক, এবং মায়ের সূত্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা নরেন্দ্র মোদী সরকারের নেতৃত্বে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধী, তাদের দ্বন্দ্বে মামদানির নির্বাচনী প্রচার ও বিজয় ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মামদানির স্পষ্ট বক্তৃতাই ক্ষুব্ধ করেছে গোঁড়া হিন্দুদের, যারা তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার।

  • মোদি নিয়ে মন্তব্য: নিউইয়র্কে গেলে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করবেন কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে মামদানি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি 'যুদ্ধাপরাধী' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি ২০০২ সালে মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় তাঁর নীরবতাকে তুলে ধরেন, যেখানে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। এই ঘটনার পর ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতায় গুরুতর আঘাত হানার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র মোদির ভিসা বাতিল করেছিল।

  • বাবরি মসজিদ বিতর্ক: মামদানি গাজা ও ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে বরাবরই সোচ্চার। তিনি অযোধ্যায় হিন্দু উগ্রবাদীদের বাবরী মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণের বিরোধিতায় ২০২০ সালে টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভেও অংশ নিয়েছিলেন।

  • বিরোধীদের বিদ্বেষ: মামদানির মুসলিম ধর্মবিশ্বাসের কারণে তাঁর বিরোধীরা নতুন মেয়রকে 'জিহাদি', 'ইসলামপন্থী', 'হিন্দু বিরোধী' কিংবা 'ভারতবিরোধী' বলে আখ্যায়িত করেছে। ভোটের দিন পর্যন্ত কট্টরপন্থীরা তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া সহ মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করার নানা বিদ্বেষপূর্ণ দাবি তুলেছিল। বিজেপি-পন্থী সংবাদমাধ্যমগুলোও তাঁকে 'ভারত বিরোধী প্রচারের জন্য তহবিল' পাওয়ার দাবি তুলেছিল।

  • সহযোগিতা: নিউইয়র্কে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে সব সংজ্ঞাকে ছাপিয়ে মামদানির জয় হয়েছে। সাবেক মেয়র এরিক অ্যাডামস ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়ামোর মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের তিনি টেক্কা দেন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, নিউইয়র্কে প্রায় সাত লাখের বেশি ভারতীয় প্রবাসী ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বাস। মামদানি মূলত বাংলাদেশ এভিনিউ, জ্যাকসন হাইটস এবং পার্কচেস্টারের মতো এশীয় জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছেন।

Geen reacties gevonden


News Card Generator