close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
নিউজ প্রতিবেদন:
ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে মো. দেলোয়ার হোসেনকে। স্থানীয় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের দাবি, দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা এবং জনপ্রিয়তার কারণে দেলোয়ার হোসেনকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
কে এই দেলোয়ার হোসেন?
দেলোয়ার হোসেনের রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ছাত্রজীবন থেকেই। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় বালাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। এরপর ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া, বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, ঢাকা থেকে এলএলবি ডিগ্রিও সম্পন্ন করেন।
রাজনৈতিক যাত্রা
ছাত্রজীবন থেকেই দেলোয়ার হোসেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন:
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ শাখার সেক্রেটারি (১৯৯৯-২০০০)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি (২০০৭-২০০৯)
কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি (২০১২-২০১৩)
পরে তিনি গেন্ডারিয়া থানার আমির (২০১৮-২০১৯) এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি (২০২০-অদ্যাবধি) পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
নির্বাচনে প্রার্থিতা ও চ্যালেঞ্জ
জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে জামায়াত তাকে প্রার্থী করেছে। দেলোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে দরিদ্র ও অসহায়দের সহায়তা করে আসছেন, যার ফলে এলাকায় তার ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে।
তবে, তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে, যা জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হচ্ছে। তার সমর্থকরা বলছেন, এসব মামলা তাকে দমিয়ে রাখার কৌশল।
নির্যাতনের ইতিহাস ও প্রতিক্রিয়া
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি থাকাকালীন (২০১২-২০১৩) সময়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং টানা ৬০ দিন রিমান্ডে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তার সমর্থকদের মতে, এই নির্যাতন তাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে এবং সাধারণ জনগণের কাছে তিনি একজন নির্যাতিত নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, আসন্ন নির্বাচনে তিনি জামায়াতের জন্য শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পারবেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুন অর রশিদ বলেন, “আমরা নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ভোটের জন্য আন্দোলন করেছি। এবার অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং সব দল অংশ নেবে, এটাই স্বাভাবিক। জামায়াত তাদের প্রার্থী দিয়েছে, এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।”
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার তিনটি আসনে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি আমাদের নির্বাচনী কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”
নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রভাব
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আসনে জামায়াতের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে রাজনৈতিক কৌশলগত পরিবর্তন নির্দেশ করতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, আসন্ন নির্বাচনে দেলোয়ার হোসেন কতটা শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেন এবং ভোটাররা তাকে কতটা সমর্থন জানাবে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली



















