close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি, ফাঁকা কাউন্টার! বিনা টিকিটে যাত্রীদের ভ্রমণের সুযোগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকার মেট্রোরেল কর্মীরা পুলিশের লাঞ্ছনার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। তবে যাত্রী দুর্ভোগ এড়াতে রেল চালু রাখা হলেও কাউন্টারে কর্মী না থাকায় বিনা টিকিটে যাত্রার সুযোগ পাচ্ছেন যাত্রী..

ঢাকার মেট্রোরেল কর্মীরা পুলিশের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সোমবার (১৭ মার্চ) থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চার কর্মী পুলিশের দ্বারা মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ এনে তারা এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।

যদিও যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে কর্মীদের অনুপস্থিতির কারণে বেশিরভাগ কাউন্টার ফাঁকা রয়েছে। ফলে টিকিট ছাড়াই যাত্রীদের ট্রেনে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মেট্রোরেলের ভেতরে দেখা গেছে, কয়েকজন আনসার ও পুলিশ সদস্য ছাড়া অন্য কোনো কর্মী উপস্থিত নেই। টিকিট বিক্রি ও চেকিংয়ের জন্য কাউকে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি পাস মেশিনও বন্ধ রয়েছে। ফলে বিনা টিকিটেই যাত্রীরা ট্রেনে চড়তে পারছেন।

কেন কর্মবিরতি?

মেট্রোরেল কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, সচিবালয় স্টেশনে কর্তব্যরত অবস্থায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য একাধিক কর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকিও দেন। এই ঘটনার পরই কর্মীরা তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

মেট্রোরেল কর্মীদের দাবিসমূহ:

মেট্রোরেল কর্মীরা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের দাবিগুলো হলো:

  1. অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এসআই মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে।

  2. কনস্টেবল রেজনুল ও ইন্সপেক্টর রঞ্জিতসহ জড়িত সকল পুলিশ সদস্যকে শাস্তি দিতে হবে এবং তারা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

  3. মেট্রোরেল, কর্মী ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে হবে।

  4. এমআরটি পুলিশ বাহিনী অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

  5. স্টেশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

  6. আহত কর্মীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তাদের দাবি মানা না হলে মেট্রোরেল কর্মীরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

কী ঘটেছিল সেদিন?

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সচিবালয় স্টেশনে দুই নারী যাত্রী কোনো পরিচয়পত্র ছাড়াই বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়েন। এ সময় কর্তব্যরত স্টাফ তাদের সুইং গেট ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এরপর আরও কয়েকজন পুলিশ এসে মেট্রোরেলের স্টাফদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং একপর্যায়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একজন কর্মীর কাঁধে বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়, অন্যজনকে মারধর করে এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর থেকে কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর আহত কর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, হেনস্তার শিকার এক কর্মী বাসায় ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বর্তমান পরিস্থিতি

১৭ মার্চ সকাল থেকেই মেট্রোরেল চালু থাকলেও কার্যত কোনো কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন না। যাত্রীদের টিকিট কাটার সুযোগ নেই, ফলে বিনা টিকিটেই মেট্রোরেলে ভ্রমণ করছেন অনেকে। যাত্রীদের অনেকে বিনা বাধায় স্টেশনের গেট পার হচ্ছেন।

পরবর্তী করণীয়

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করছেন। কর্মীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ মুহূর্তে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে তারা আপাতত ট্রেন চালু রেখেছেন।

মেট্রোরেল কর্মীরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মানা না হবে, ততক্ষণ তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator