close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মাঠে ফের হাট বসানোর চেষ্টায় প্রভাবশালীরা

Akm Kaysarul Alam avatar   
Akm Kaysarul Alam
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

 

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এস সি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটির অবস্থান পাশাপাশি। একই মাঠে খেলাধুলা করে শিক্ষার্থীরা। আগে মাঠটিতে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার হাট বসত। গত বছরের ১২ মে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন মাঠে হাট বন্ধ করে। তখন থেকে পাশের ব্যক্তি মালিকানার জমিতে চলে বেচাকেনা। 


এমন উদ্যোগে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরে বিদ্যালয় দুটিতে। সম্প্রতি শিয়ালখোওয়া হাটের ইজারা নিয়েছে প্রভাবশালী এক মহল। তারা মাঠটিতে ফের হাট বসানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। হাট না বসানোর দাবিতে গত মাসে অভিভাবকদের পক্ষে আব্দুল খালেক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।


মাঠে ফের হাট বসবে বলে শুনেছেন শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম। তাঁর ভাষ্য, হাট বসলে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হবে। সকাল ১০টার পর থেকে দোকান বসার পাশাপাশি লোকজনের সমাগম বাড়তে শুরু করে। এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্রনাথ রায় বলেন, হাটের দিনে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম থাকে। বিদ্যালয় মাঠে আবারও হাট বসবে কিনা–এ বিষয়ে ইউএনওর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাটের পাশে এ দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও তিনটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দেড় হাজারের বেশি ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করছে। একটি মাঠই তাদের ভরসা। 


ব্যবসায়ী মাসুদ রানার ভাষ্য, আগের সরকারের আমলে ৭৬ শতক খাসজমিতে দোকান তুলে ভাড়া দেয় একটি চক্র। সেখানে হাট না বসিয়ে ব্যক্তিমালিকানায় কার্যক্রম চালায় আগের ইজারাদার। এবার বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর চেষ্টা করছে। সামাজিক সংগঠন অন্ন-ধারা ২৬-এর সভাপতি সোহেল রানা বলেন, নতুন ইজারাদার এলাকার বড় নেতার লোক বলে পরিচিত।


শিয়ালখোওয়া হাট ও বাজারে তামাক, গরু, ছাগল, হাস, মুরগি, সাইকেল, মাছসহ নানান জিনিস বেচাকেনা চলে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাটের কার্যক্রম চালু হলে ব্যাপক লোকসমাগম, শব্দদূষণ ও বর্জ্যে শিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অতিরিক্ত লোকসমাগমে সামাজিক অপরাধ বাড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।


৭৬ লাখ টাকা ইজারায় হাটের ডাক পেয়েছেন বলে জানান শিয়ালখোওয়া হাট ও বাজারের ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরু। তিনি বলেন, ‘দেখা যাক কোথায় হাট বসানো যায়। সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, অনেক আগ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট বসত। গত বছর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ বছর আবারও হাট বসবে কিনা, এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাটটি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে বিকল্প স্থান খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Walang nakitang komento