জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দুই পলাতক নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে; আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে তাদের অবশ্যই আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পরে মামলাটি দায়ের হয় এবং মাত্র চার মাস সাত দিনের মাথায় সোমবার এই রায় ঘোষণা করা হলো। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার প্রথম রায়।
রায়ে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি দুইটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই দুই নেতাকে পলাতক দেখিয়েই মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, এই মামলার রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ট্রাইব্যুনাল একইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত এই দুই নেতার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বন্টনের নির্দেশ দিয়েছে।
তবে এই রায়টি আইনি প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ নয়। সাজাপ্রাপ্তদের আপিল করার সুযোগ থাকলেও, পলাতক থাকার কারণে এক্ষেত্রে একটি বড় বাধা রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীমের মতে, দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করলে অথবা গ্রেফতার হলেই কেবল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার আইনি অধিকার পাবেন। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করতে হলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে প্রথমে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিল, ২০১৩ অনুযায়ী, রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে এই আপিল দায়ের করতে হবে।
রায়টিকে 'পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এটিকে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিস্ক্রিয় করার একটি চক্রান্ত বলেও দাবি করেছেন।



















