close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

লক্ষীপুরে নদী ভাঙনে লাখ লাখ মানুষ নিঃস্ব: বাঁধ নির্মানে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর গণমাধ্যমকর্মী জুনাইদ আল হাবিবের খোলা চিঠি..

Jewel Azzam avatar   
Jewel Azzam
মেঘনা নদীর ভাঙন লাখ লাখ মানুষকে নিঃস্ব করেছে । নদী তীরবর্তী মানুষেরা ভাঙনের কবলে হারিয়েছে পৈতৃক ভিটা, হয়েছে বাস্তুহারা।
সরকারের দৃশ্যমান কোন উদ্যেগ নেই নদী-তীরবর্তী মানুষের ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা..

মেঘনা নদীর ভাঙন লাখ লাখ মানুষকে নিঃস্ব করেছে । নদী তীরবর্তী মানুষেরা ভাঙনের কবলে  হারিয়েছে পৈতৃক ভিটা, হয়েছে বাস্তুহারা। 
সরকারের দৃশ্যমান কোন উদ্যেগ নেই নদী-তীরবর্তী মানুষের ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য। বাজেট হলেও দেখা যায় না কোন দৃশ্যমান কাজ। ফলে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন বাড়ে আর নদীতে হারিয়ে যায় মানুষের ঘর, বাড়ি আর স্বপ্ন। 

এইবার নদীর বাঁধ দ্রুত বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর  গণমাধ্যমকর্মী জুনাইদ আল হাবিবের খোলা চিঠি। 

চিঠিতে তিনি নদী-তীরবর্তী  মানুষের সংকট, দুঃখ ও হতাশার কথা উল্লেখ করেন। 
চিঠিতে আরও উঠে আসে নদী তীরবর্তী মানুষের প্রতি সরকারের অবহেলার কথা। 

নিম্নে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

খোলা চিঠি ৩০ মে, ২০২৫
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

বিষয়: লক্ষ্মীপুরের নদীবাঁধ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে। 

জনাব,

আমি জুনাইদ আল হাবিব, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনাতীরের বাসিন্দা। বিগত ৫ বছর মেঘনার জলোচ্ছ্বাস আমার এলাকার মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। দীর্ঘ তিন যুগ ধরে ক্রমাগত নদীভাঙন, নদীতে অসংখ্য ডুবো চরে নাব্যতা সংকট জেলার রামগতি ও কমলনগরের মানুষের জীবনমানে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এখানকার মানুষ এখন রীতিমতো লবণ পানির সঙ্গে লড়াই করছে। যে চিত্র এর আগে পশ্চিম উপকূলে ছিল। সেটা এখন পূর্ব উপকূলের এ জনপদে বেশ প্রভাব ফেলছে। মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার অর্ধেক জনপদ বিলীন হয়ে গেছে। 

বেশ কয়েক বছর ধরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ একনেকের বাজেটে নদীভাঙন রোধে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট গ্রহণ করা হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি কেবল কিছু জিওব্যাগেই সীমাবদ্ধ। বিগত সরকারের আমলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতির নানাবিধ চিত্র মানুষ দেখলেও, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে নামলে স্থানীয় সামাজিক আন্দোলনকারীদের হামলা, মামলা, হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছিলো। নদীভাঙনে লাখ লাখ মানুষ ঘর বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব, মানবেতর জীবনযাপন করছে। আপনি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরকে চেনেন, এর আগে কমলনগর সংক্রান্ত এক নিউজে আপনি আপনার বিদেশ যাত্রা বাতিল করেছেন। 

বর্তমানে এ জনপদের মানুষের জীবন-জীবিকা নানাভাবে হুমকির মুখে। নদীতীর রক্ষাবাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের তেমন অগ্রগতি নেই। একনেকের বাজেটের সময়ও শেষ প্রায়। এদিকে বর্ষাও চলে এসেছে, তীরের মানুষের বাড়িঘর প্রতিদিন জোয়ারে ভাসে। পানির নিচে তলিয়ে যায় হাজার হাজার একরের ফসলের মাঠ। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট ভেঙে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। 

নদীতীরের বাঁধ নির্মাণে এ অঞ্চলের মানুষ সেনাবাহিনীকে চেয়েছিল। সেটা বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও বিগত সরকার সেটা করেনি। তাদের নিয়োগকৃত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নয়ছয় করে কাজ করছে। তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব থাকলেও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড যেন নির্বিকার। 

৫ বছর আগে এ অঞ্চলে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে যে সমস্ত রাস্তা-ঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে, তার পুনঃনির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর আগে বিগত বছরের বন্যার ক্ষততো আছেই। 

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের আপনি অন্যতম পথিকৃৎ। আপনি জানেন, কিভাবে সমাজ উন্নয়ন করতে হয়। আমরা উপকূলবাসী আপনার দিকে চেয়ে আছি, এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ আপনি দূর করতে অচিরেই উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। 

জুনাইদ আল হাবিব
গণমাধ্যমকর্মী।।


উল্লেখ্য, লক্ষীপুরের মেঘনা নদীর তীরবর্তী মানুষের সংকট দূর করা এখন সময়ের দাবি। নদীবাঁধ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই রক্ষা করা যাবে নদী তীরবর্তী মানুষের ঘর,বাড়ি ও স্বপ্ন ।

No comments found