close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

কুষ্টিয়ায় মা দক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে যুবককে কু পি য়ে হ ত্যা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মাদক বিরোধে উত্তপ্ত দৌলতপুর! প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবক নিহত, আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে। ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডে কাঁপছে পুরো এলাকা, অভিযুক্তদের ধরতে চলছে অভিযান।..

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাদকের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে ঘটে গেল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুণ্ডি গ্রামে ঠোঁটারপাড়া মাঠে ভয়ঙ্কর এই হামলার শিকার হন মহন আলী (২৫) ও তার বন্ধু হৃদয় (২৫)। প্রতিপক্ষের হাতে কুপিয়ে গুরুতর আহত হন তারা। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় মহনের।

নিহত মহন আলী উপজেলার জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা, তার বাবার নাম মৃত মদন আলী। গুরুতর আহত হৃদয় একই গ্রামের মৃত মসুর আলীর ছেলে। হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে এবং তিনি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মহন ও হৃদয়ের সঙ্গে ঠোঁটারপাড়া ও জামালপুর এলাকার একাধিক মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ওই দুই বন্ধু এলাকার একজন পরিচিত বন্ধু জনির অসুস্থ দাদাকে দেখতে গিয়েছিলেন ঠোঁটারপাড়ায়। সেখান থেকে ফেরার পথে রাতের অন্ধকারে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের উপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা প্রথমে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করে। গুলির শব্দে জনি পালিয়ে যেতে পারলেও মহন ও হৃদয় ধরা পড়ে যান। এরপর ঠোঁটারপাড়া মাঠে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর চালানো হয় নারকীয় হামলা। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন দুজনেই।

হামলার কিছুক্ষণ পর টহলরত বিজিবির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে। প্রথমে তাদের নেওয়া হয় দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মহন ও হৃদয়কে পাঠানো হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মহনের। হৃদয়ের শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।

দৌলতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মাদক নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্ব থেকেই এমন ভয়ঙ্কর হামলা হয়েছে। একজন নিহত হয়েছেন, আরেকজন হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত চলছে।”

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, নিহত মহনের মরদেহ বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোক আর আতঙ্কের ছায়া। গ্রামবাসীরা জানায়, মাদক ব্যবসা ও এর সঙ্গে জড়িত চক্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অপকর্ম চলছিল, কিন্তু প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে তা রুখে দেওয়া যায়নি। এই হত্যাকাণ্ড তাদের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

নিহত মহনের পরিবার ও স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন, এলাকায় সক্রিয় মাদক চক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা বলছেন, “আজ মহন মরেছে, কাল যে আমাদের সন্তান মরবে না, তার কী নিশ্চয়তা?” প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি, শুধু হামলাকারীদের নয়, পুরো মাদক সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনা কেবল একটি হত্যাকাণ্ড নয়—এটি স্থানীয় সমাজ ও প্রশাসনের জন্য একটি সতর্কবার্তা। মাদকের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এমন ট্র্যাজেডি বাড়তেই থাকবে। প্রশাসনের তৎপরতা কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator