ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে সাবেক মেয়র ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. রেজা হাসানের কার্যালয় থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এ সময় কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী উপস্থিত ছিলেন।
মনিরুল হক সাক্কু দীর্ঘদিন কুমিল্লা পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুইবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন এবং স্থানীয় রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেন। তবে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি তাকে বহিষ্কার করে। তবুও তার জনপ্রিয়তা ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা তাকে নির্বাচনী মাঠে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছে।
কুমিল্লা-৬ আসনটি আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলা, সিটি করপোরেশন এবং সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত। রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনকে ‘সদর আসন’ বলা হয়। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন মনিরুল হক চৌধুরী। একই এলাকায় সাক্কুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ একই পরিবার ও রাজনৈতিক শিবির থেকে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সাক্কুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া বিএনপির ভোটব্যাংকে বিভাজন তৈরি করতে পারে। তার জনপ্রিয়তা ও দীর্ঘদিনের মেয়র হিসেবে অভিজ্ঞতা তাকে একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলছে। অন্যদিকে, দলীয় প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর প্রচারে সাক্কুকে দেখা গেছে, যা রাজনৈতিকভাবে জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
তবে স্থানীয়দের একটি অংশ মনে করছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে এলে এসব জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে। তারা বিশ্বাস করেন, তার নেতৃত্বে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতা তৈরি হতে পারে। এতে মনিরুল হক সাক্কুসহ অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী মাঠে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে পারেন।
সব মিলিয়ে, কুমিল্লা-৬ আসনে মনিরুল হক সাক্কুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হলেও তার জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞতা তাকে নির্বাচনী মাঠে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলছে। আর স্থানীয়দের প্রত্যাশা, তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা তৈরি হয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা অনেকটাই প্রশমিত হবে।



















