ক্ষমতার লোভ শেখ মুজিবও সামলাতে পারেননি, আদালতকে আউয়াল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকার আদালতে রিমান্ড শুনানিতে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। বললেন, “ক্ষমতার লোভ শেখ মুজিবও সামলাতে পারেননি। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন এতটাই অসহায় যে মৌলিক সংস্কার না হলে বাংলা..

রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড শুনানিতে হাজির হয়ে আদালতে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায় উঠে এসেছে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ভিত নড়ে ওঠার মতো সত্য এবং ইতিহাসের পুনঃমূল্যায়ন।

আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে আউয়াল বলেন, “ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি শেখ মুজিবুর রহমানও। এ লোভ একবার শুরু হলে থামে না। আর এ দেশের রাজনীতিতে সত্য, ন্যায়বিচার কিংবা জনমতের কোনো দাম নেই।

তিনি বলেন, শুধু একজন নির্বাচন কমিশনার নয়, গোটা কমিশনই একটি সীমাবদ্ধ কাঠামোর ভেতরে আটকে আছে। রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এবং নীতিহীন প্রভাবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

আদালতকে তিনি আরও বলেন, “এই কাঠামো ভেঙে মৌলিক সংস্কার না হলে আগামী এক হাজার বছরেও এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আপনি ১০ জন নতুন কমিশনার আনবেন, ২০টা কমিটি করবেন, কিছুই হবে না। কারণ সমস্যাটা কাঠামোগত এবং রাজনৈতিক ইচ্ছার অভাবে।

এই মন্তব্যগুলো শুধু বিস্ময় তৈরি করেনি, বরং দেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে গভীর প্রশ্নও উত্থাপন করেছে।

তিনি অকপটে স্বীকার করেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনও বারবার রাজনৈতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার করেছে। “আমাদের চেয়ারে বসে মনে হতো আমরা খেলনা। রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের যেভাবে ইচ্ছে নাচাতো। আমরা নিরুপায় ছিলাম,”— বলেন আউয়াল।

এমন মন্তব্যের ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো একে দেখছে স্বতঃস্ফূর্ত সত্য উন্মোচন হিসেবে, আর ক্ষমতাসীনরা বলছে— এটা একটি 'রাজনৈতিক নাটক' এবং বিচারের ভয় থেকে তৈরি আত্মরক্ষামূলক কৌশল।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মন্তব্যগুলো রাজনৈতিক হলেও মামলার প্রেক্ষাপট বিচারে এগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনা হবে।” এরপর আদালত আউয়ালকে চার দিনের রিমান্ডে প্রেরণের আদেশ দেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে— দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা কি সত্যিই এতটাই দুর্বল? একজন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারের মুখ থেকে এমন মন্তব্য কি নির্বাচনী কাঠামো ভাঙার সূচনা নাকি একটি নতুন জটিলতার জন্ম?

শেখ মুজিবকে সরাসরি ‘ক্ষমতার লোভ সামলাতে না পারা’ ব্যক্তিদের তালিকায় ফেলা শুধু সাহসী নয়, দেশের ইতিহাস ও রাজনীতির ধারাকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো দাবি। কাজী হাবিবুল আউয়ালের এই বক্তব্য বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে একটি আলোচিত অধ্যায় হয়ে থাকবে।

Không có bình luận nào được tìm thấy