close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ক্ষমতায় থাকতেই গাজা যুদ্ধ চালাচ্ছেন নেতানিয়াহু, মনে করেন অধিকাংশ ইসরায়েলি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলিদের বড় অংশই বিশ্বাস করেন, গাজায় যুদ্ধ জয়ের চেয়েও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আসল লক্ষ্য ক্ষমতা ধরে রাখা। সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এলো বিস্ময়কর সব তথ্য—বিপুল সংখ্যক মানুষ নেতানিয়াহুর স্বচ্ছতা ও বিশ্ব..

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে আবারও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দেশের জনগণ তার উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর সংশয়ে। সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে প্রকাশ পেয়েছে, ইসরায়েলিদের একটি বড় অংশ মনে করেন, গাজায় চলমান যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য আসলে জিম্মিদের মুক্তি বা যুদ্ধ জয় নয়, বরং ক্ষমতা ধরে রাখাই নেতানিয়াহুর আসল লক্ষ্য।

ক্ষমতা—নেতানিয়াহুর প্রধান লক্ষ্য!
চ্যানেল ১২ নিউজ পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, যখন উত্তরদাতাদের প্রশ্ন করা হয়, “আপনার মতে, নেতানিয়াহুর মূল উদ্দেশ্য কী?”, তখন ৫৫ শতাংশ সোজাসুজি উত্তর দেন, “ক্ষমতায় থাকা।” এর বিপরীতে মাত্র ৩৬ শতাংশ বলেন, “জিম্মিদের মুক্ত করা।”
শুধু তাই নয়, প্রশ্নে "যুদ্ধ জয়" বিকল্প হিসেবে রাখলেও ফলাফল প্রায় একই থেকে যায়। এর অর্থ, জনগণ নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালানোর পেছনের উদ্দেশ্যকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

জিম্মি মুক্তি হচ্ছে না কেন?
জরিপে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল: “জিম্মিদের মুক্তি এখনো কেন সম্ভব হচ্ছে না?”
এ প্রশ্নে ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা রাজনৈতিক কারণকে দায়ী করেন। ৩৮ শতাংশ মনে করেন, যৌক্তিক বা কৌশলগত কারণ রয়েছে। বাকিদের মধ্যে ৯ শতাংশ জানান, তারা নিশ্চিত নন।

জনগণের চোখে অযোগ্য নেতৃত্ব?
সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নেতানিয়াহু। জনগণ কতটা তার বক্তব্যে আস্থা রেখেছেন তা নিয়েও জরিপে প্রশ্ন রাখা হয়।
ফলাফলে দেখা যায়, ৬২ শতাংশ মানুষ মনে করেন তিনি বিশ্বাসযোগ্যভাবে তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এর বিপরীতে মাত্র ৩৪ শতাংশ বলছেন, নেতানিয়াহু সফলভাবে বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। ৪ শতাংশ ছিলেন দ্বিধায়।

‘কাতারগেট’ ইস্যু: বিশ্বাসযোগ্যতা সংকটে নেতানিয়াহু
জরিপে আরও একটি স্পর্শকাতর বিষয় উঠে আসে—নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের ‘কাতারগেট’ নামক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ততা। অভিযোগ রয়েছে, তারা কাতারের হয়ে কাজ করেছেন।
এই ইস্যুতে নেতানিয়াহু দাবি করেন, তিনি বিষয়টি জানতেন না। কিন্তু ইসরায়েলিদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ বলেন, তারা এই দাবিতে আস্থা রাখতে পারছেন না।
মাত্র ৩০ শতাংশ নেতানিয়াহুর বক্তব্য বিশ্বাস করেন এবং ১২ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চিত।

জোট সরকারের সমর্থকরা এখনও নেতানিয়াহুর পক্ষে
যদিও সার্বিকভাবে নেতানিয়াহুর প্রতি আস্থা কমেছে, তথাপি জোট সরকারপন্থীদের মধ্যে এক ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে।
জরিপ বলছে, তাদের ৫৮ শতাংশ নেতানিয়াহুর পক্ষে আস্থা রাখছেন, যেখানে ২৭ শতাংশ ভিন্নমত পোষণ করছেন।

আগামী নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন
ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আরেকটি গুঞ্জন চলছে—আগামী বছর নির্ধারিত নির্বাচন আদৌ হবে কিনা। জরিপ অনুসারে, ৫০ শতাংশ মনে করেন, বর্তমান সংকটের অজুহাতে নির্বাচন বাতিল হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, ৩৫ শতাংশ মনে করেন, নির্বাচন হবেই।

তবে এই জরিপে কতজন মানুষ অংশ নিয়েছিলেন সে তথ্য চ্যানেল ১২ প্রকাশ করেনি, যা এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করছে।


 

নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েল এক গভীর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গাজা যুদ্ধ, জিম্মিদের মুক্তি, কাতারগেট কেলেঙ্কারি এবং নির্বাচন বাতিলের আশঙ্কা—সবকিছু মিলিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠেছে: এই যুদ্ধ কার জন্য? দেশের জন্য, নাকি নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য?

Không có bình luận nào được tìm thấy