কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে দেড় বছর আগে সংঘটিত একটি ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ্-আল-ফারুকের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিমের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
এ অভিযানে অংশ নেন কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার, এসআই মোঃ মহসিন মিয়া এবং তাদের সঙ্গীয় ফোর্স। তারা দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর রুজুকৃত কোম্পানীগঞ্জ থানার মামলা নং-১১, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী ক্লুলেস হত্যা মামলার মূল রহসউদঘাটন করতে সক্ষম হন। এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার জানায় ২০২৪ সালের ২২ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টার পরে রামপুর ৩ নং ওয়ার্ড, জাফর আহম্মদের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ শরীফের সহিত মুছাপুর সাকিনের নুরুল আলম রনির সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করিয়া কথা কাটাকাটি হয় । প্রতিবন্ধী মোঃ শরীফের নিকট রনি একটি সিগারেট চায়। কিন্তু শরীফ সিগারেট না দেওয়ায় তাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে রনি তার বাড়িতে গিয়ে টাকা এনে রংমালা বাজারের হিন্দু পাড়া জনৈক হরির দোকান হইতে সিগারেট কিনে আনেন এবং তাদের ঘাটলায় বসে সিগারেট খাওয়া শুরু করে। নুরুল আলম রনির সিগারেট খাওয়া অবস্থায় মোঃ শরীফ আবার ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তখন তাদের মধ্যে পুনরায় ঝগড়া হইলে নুরুল আলম রনি কৌশলে রাত ১ টার পর শরীফকে রংমালা দারুল উলুম মাদ্রাসার পিছনে নিয়ে যান। সেখানে রনি শরীফকে তার ইচ্ছামত মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করিলে শরীফ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন রনি তাকে মাদ্রাসার পিছনে লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দেন। রনি সারারাত পুকুর ঘাটে বসে থেকে শরীফের মোবাইলটি নিয়ে ভোরবেলা বাড়িতে যান। তার প্রয়োজনীয় জামা কাপড় নিয়ে সকাল বেলা বসুরহাট হইতে চট্রগ্রামে চলে যান। রনি , শরীফের মোবাইলটি ষ্টেশন রোডে বিক্রি করে দেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী খাবার দিলে পুলিশ ঘটানাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে ইউডি মামলা নেন। পরবতী©তে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে পুলিশ বাদী হয়ে মার্ডার মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ইন্সপেক্টর বিমল কর্মকার ও এসআই মহসিন গত কালকে ঘটনার সহিত জড়িত আসামী মুছাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল আলম রনি (২৭), পিতা-সফিকুল আলম বাহার, মাতা-সেতারা বেগম, কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে, সে স্বেচ্ছায় হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এই ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে