ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গত কয়েকদিন ধরে একটি সতর্কবার্তা ও গুঞ্জন ঘুরপাক খাচ্ছে—আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশে ভয়ংকর কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এই গুঞ্জন, রাজনৈতিক অঙ্গনে ভয়ভীতি এবং দিল্লীর হঠাৎ অস্থিরতা নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ করেছেন রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট গোলাম মাওলা রনি।
গুঞ্জনের তিনটি মাত্রা: গোলাম মাওলা রনি তার ভিডিওতে এই ৪৮ ঘণ্টার ‘আতঙ্ক’কে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছেন:
১. রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও নিরাপত্তাহীনতা: ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে তরুণ নেতৃত্ব ও এমপি প্রার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের আশঙ্কা, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।
২. ‘বিপ্লবী সরকার’ ও অপপ্রচার: একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী প্রচার চালাচ্ছে যে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে নতুন একটি ‘বিপ্লবী সরকার’ গঠিত হতে যাচ্ছে। এমনকি ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সেই সরকারের প্রধান হিসেবে দেখিয়ে ফটোকার্ড তৈরি করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যদিও মাহমুদুর রহমান ও তার পত্রিকা এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
৩. তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বানচালের চেষ্টা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দেশে ফিরতে না পারেন, সেজন্য একটি পক্ষ আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বড় কোনো অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য তারেক রহমান ও বিএনপিকে ভয় দেখানো অথবা তার ফেরার দিনটিকে বিশৃঙ্খল করে তোলা।
ভারতের প্রতিক্রিয়া ও অস্থিরতা: রনি উল্লেখ করেন, এই মুহূর্তে ভারতের সরকার ও বিরোধী দলের নেতারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে চরম অস্থিরতা দেখাচ্ছেন। নরেন্দ্র মোদি, মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে শশী থারুর—সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমেও এই ‘৪৮ ঘণ্টা’ বা ‘ডেডলাইন’ শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে, যা কাকতালীয় হলেও তাৎপর্যপূর্ণ।
মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: রনি মনে করেন, যদিও নির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করে সাধারণত কোনো বড় অঘটন ঘটানো যায় না এবং এসব গুজবের ৫০ শতাংশই ভুয়া, তবুও যখন ১৮ কোটি মানুষ সম্মিলিতভাবে হতাশ ও আতঙ্কিত থাকে, তখন প্রকৃতি অদ্ভুতভাবে কিছু ঘটনা ঘটিয়ে দেয়। তিনি উদাহরণ হিসেবে শেখ হাসিনার পতন এবং ১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যখন মানুষের মুখ দিয়ে কোনো আশঙ্কা বা কথা বারবার উচ্চারিত হয়, তখন তা বাস্তবে রূপ নেওয়ার নজির ইতিহাসে রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ যখন স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আস্থা পাচ্ছে না, তখন তারা অলৌকিক বা চরম কোনো পরিবর্তনের কথা চিন্তা করছে। রনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন, যেন দেশের জন্য যা কল্যাণকর, আল্লাহ সেটাই বরাদ্দ করেন এবং মানুষকে এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেন।



















