close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

খুলনায় ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে ২ জন নিহত, আহত ৪

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
খুলনায় গ্যাসভর্তি ট্রাকের সঙ্গে ইজিবাইকের সংঘর্ষে কিশোরসহ ২ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন। ট্রাকচালক পলাতক। স্থানীয়দের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।..

খুলনার হোগলাডাঙ্গা মোড়ে সোমবার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। একটি এলপি গ্যাস ভর্তি ট্রাক এবং বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন দুইজন, আহত হয়েছেন আরও চারজন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো এলাকা।

নিহতদের একজন রায়হান (১৬), যিনি হোগলাডাঙ্গা বাঁশবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেনের ছেলে। অন্যজন জুয়েল বাবু (৩৫), তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ জানায়, দ্রুতগতির ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইজিবাইকটিকে সজোরে আঘাত করে। ইজিবাইকটি ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই কিশোর রায়হান মারা যায়।

আহত চারজনের মধ্যে রয়েছেন—ইজিবাইক চালক কবির, যাত্রী টিটু, হাসিব এবং নগেন্দ্রনাথ সরকার। তাদের সবাইকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান জুয়েল বাবু।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, আহতদের শরীরে মারাত্মক জখমের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তারা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।

হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাশার নিশ্চিত করেছেন দুর্ঘটনার তথ্য। তিনি বলেন, “ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও হেলপার দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। আমরা তাদের আটকের চেষ্টা করছি।”

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, অতিরিক্ত গতি এবং চালকের অসাবধানতাই এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার মূল কারণ। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

দুর্ঘটনার পর হোগলাডাঙ্গা মোড়ে জনস্রোত থেমে গেছে। স্থানীয় লোকজন দলে দলে জড়ো হন ঘটনাস্থলে। অনেকের চোখে ছিল পানি, কেউ বা ক্ষোভে ফেটে পড়েন চালক ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণহীনতার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম বলেন, “এখানে প্রতিদিনই ভয়াবহভাবে গাড়ি চলে। কোনো গতি নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রশাসনের নজরদারি জরুরি।”

এই দুর্ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে নয়, পুরো এলাকায় শোক ও আতঙ্কের সঞ্চার করেছে। স্থানীয়দের একটাই দাবি—ঘাতক চালককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং হোগলাডাঙ্গা মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা হোক।

এই সড়ক দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, নিরাপদ সড়কের দাবিটা এখন শুধু আন্দোলনের স্লোগান নয়—এটা জীবন বাঁচানোর বাস্তব চাহিদা। অবিলম্বে চালকদের লাইসেন্স ও ট্রাফিক মনিটরিং জোরদার না করলে, রাস্তায় আরও অনেক রায়হান ও জুয়েলের প্রাণ যাবে অকালে।

No comments found