খুলনা, ১ই জলাই ২০২৫ – খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে উন্নয়ন কাজের নামে চলছে অব্যবস্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে এবং অপরিকল্পিতভাবে পিচঢালা রাস্তার উপর ইটের সলিং বসানোর কারণে এই মহাসড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যান চলাচলের অনুপযোগী এই সড়কে গত দুই মাসে ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায়।
সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে গতকাল, ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে। হরিণটানা থানার হোগলাডাঙ্গা মোড়ে একটি গ্যাসবোঝাই ট্রাকের বেপরোয়া গতির কারণে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক ও এক যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও চারজন যাত্রী, যাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা নিহতদের লাশ রাস্তার ওপর রেখে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হোগলাডাঙ্গা মোড়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটি ঘিরেই রয়েছে প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ১,০০০ শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। এক সময় এখানে একটি স্পিড ব্রেকার থাকলেও রাস্তা মেরামতের সময় সেটি তুলে ফেলা হয়। বর্তমানে ইট বিছানো রাস্তায় যানবাহন চলতে না চাওয়ায় তারা ভালো অংশ দিয়ে দ্রুতগতিতে চলার চেষ্টা করে, যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,
“আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যায়। এখানে কোনও গতি নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।”
দাবি উঠেছে – দুইটি স্পিড ব্রেকার স্থাপন করার
স্থানীয়দের প্রধান দাবি, হোগলাডাঙ্গা মোড় ও স্কুল সংলগ্ন স্থানে দ্রুত দুইটি স্পিড ব্রেকার বসাতে হবে। একইসঙ্গে ইটের সলিং তুলে পিচঢালা রাস্তা দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে হবে যাতে সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচল করতে পারে।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে হরিণটানা থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান,
“ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয়দের দাবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
অন্যদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রতিবেদন
সুমন সরদার
বিশেষ প্রতিনিধি, খুলনা