হবিগঞ্জের খোয়াই নদী তার প্রচণ্ড ঢল ও বৃষ্টির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রবাহিত ঢল এবং টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানির স্তর ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, তবে পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হবিগঞ্জের ভাদৈ এলাকায় নদীর বাঁধের কাঁচা অংশে ধস দেখা দিয়েছে, যা নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেকেই আশপাশে অবস্থান নিয়ে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন। এই বাঁধ ভেঙে গেলে বৃহৎ এলাকাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, যা হাজারো মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করবে।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের অধিকাংশ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর প্রভাব হবিগঞ্জেও পড়েছে। তবে গতকাল দুপুর থেকে হবিগঞ্জে বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, যদি বৃষ্টি বন্ধ থাকে তবে বড় ধরনের বন্যা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি থামায় বন্যার সম্ভাবনা কিছুটা কমেছে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন যে, ভারতের ত্রিপুরা পাহাড়ি এলাকায় যদি আবার বৃষ্টি হয়, তাহলে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
তিনি আরও জানান, ভাদৈ এলাকায় বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় জরুরি বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং বাজেট অনুমোদন হলেই দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসী পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখছেন। একই সঙ্গে নদীপাড়ে স্বেচ্ছাশ্রমে পাহারা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় তরুণরা।
এই পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জের মানুষজন সরকারের কাছ থেকে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন, দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে এই বিপদ থেকে তারা মুক্তি পাবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও বন্যার সম্ভাবনা কমাতে স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারি সংস্থাগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।



















