২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা আজও দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। কিন্তু এই ঘটনাকে ঘিরে একাধিক রহস্য ও ষড়যন্ত্রের কাহিনী সামনে এসেছে, যা না শুধুমাত্র রাজনৈতিক অঙ্গন, বরং গোটা জাতিকে বিস্মিত করেছে। একটি শক্তিশালী বিদেশি-দেশি চক্রের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চলছে, এবং এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ট্রান্সকম গ্রুপের দুটি জাতীয় দৈনিক: প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টার।
সম্প্রতি বিভিন্ন অপরাধ বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা নিয়ে গঠিত এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের তথ্য প্রকাশ করেছেন। সংবাদপত্র দুটি, যেগুলি একসময় অনেকের কাছে নিরপেক্ষতা ও সাংবাদিকতার আদর্শ হিসেবে পরিচিত ছিল, সেগুলি নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই মামলাকে প্রভাবিত করার কাজে লিপ্ত ছিল।
প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান ২০০৮ সালে এক নিবন্ধে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বিষয়ে তার একটি চাঞ্চল্যকর বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, "বেগম খালেদা জিয়া প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরকে ২১ আগস্টের হামলা নিয়ে কোনো তদন্ত করতে নিষেধ করেছিলেন," এবং তৎকালীন সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিজের পছন্দের সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাদের দিয়ে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যমূলক তদন্ত করতে বলেছিলেন।
এই সংবাদটি সামনে আসার পরই অনেকের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে, এই রিপোর্টের মাধ্যমে প্রথম আলো প্রকৃত তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে তথ্য বিকৃত করছে। এর ফলে, তদন্তে কোনো বিশেষ প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল।
একই সময়ে, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকাও বিশেষভাবে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক রহমানকে জড়ানোর জন্য ‘ইসলামী জঙ্গি’ তত্ত্বের প্রচার চালাচ্ছিল। ২০০৯ সালে ওই পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলি মানিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, "এটা ছিল হাওয়া ভবনের প্লট"। তার রিপোর্টে তিনি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একযোগে ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করার অভিযোগ তুলে ধরেন। এর মাধ্যমে, তিনি সরাসরি তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতৃত্বকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে ক্ষতিকর তথ্য প্রচার করেছিলেন।
এছাড়া, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল যে, "বিএনপি সরকারের শীর্ষ নেতারা জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে পৃষ্ঠপোষকতা করছিল," এবং তারা ২০০৪ সাল থেকে বিভিন্ন নোংরা কাজের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছিল।
এখন, প্রশ্ন উঠেছে—এই ধরনের পত্রিকা, যারা দেশি-বিদেশি চক্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য গ্রেনেড হামলার ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? কিভাবে তারা দেশের সর্বোচ্চ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে?
এই দুটি পত্রিকা হাসিনা সরকারের আমলে তদন্তের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করতে সাহায্য করেছে, যা পরবর্তী সময়ে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে তোলে। জানা গেছে, প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টার'র রিপোর্টাররা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছেন এবং নানা ধরনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পত্রিকা দুটি ভয়ংকরভাবে সরকার বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফাঁদ পেতেছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে বড় ধরনের হুমকি। এর মাধ্যমে তারা নিশ্চিত করেছে যে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার আসল রহস্য একদিন না একদিন প্রকাশিত হবে না, এবং সত্য কখনো সামনে আসবে না।
এখন, এ নিয়ে সবার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—আসল সত্য কি কখনো উন্মোচিত হবে, নাকি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের নীল নকশা সবকিছুকে ঢেকে রাখবে?
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ধরনের ষড়যন্ত্র দেশবাসীকে গভীরভাবে ভাবাচ্ছে।
کوئی تبصرہ نہیں ملا