সময়মতো কৃষি পরামর্শ, উন্নতমানের বীজের ব্যবহার, সঠিক সময়ে সেচ ও সার প্রয়োগ এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবারের বোরো মৌসুমে কেরানীগঞ্জে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকদের ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের বন্যা।
বুধবার (১৪) মে সকালে সরেজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৭০% জমির ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, আগামী ২০ মে’র মধ্যে পুরো মৌসুমের ধান কর্তন শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন।
এ বছর কেরানীগঞ্জে ২,৫৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি ধান ২৮, ২৯, ৮৮, ৮৯, ৯২, ৯৬, ১০০, ১০১ এবং বিনা ২৫সহ বিভিন্ন জাতের ধান কর্তন চলছে।
স্থানীয় কৃষক সামসুল বলেন, “সেচে কিছু সমস্যা হলেও ফলন খুব ভালো হয়েছে। আমার জমির ধান কাটা শুরু করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৬-৭ দিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারবো।”
আরেক কৃষক ফজল মিয়া জানান, “শ্রমিক সংকট এবং মজুরি বৃদ্ধির কারণে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। একজন শ্রমিককে ৭০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হচ্ছে। তবে ভালো ফলনের কারণে খরচ বাদ দিয়েও লাভ থাকবে বলে আশা করছি।”
আলেয়া নামে এক নারী কৃষক বলেন, “এবার দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি কৃষি অফিসের পরামর্শে। ফলন খুব ভালো হয়েছে। যদিও গরমের কারণে ধান কাটা কষ্টদায়ক, তবু ভালো দাম পেলে সব কষ্ট ভুলে যাবো।”
কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন জানান, “এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় বীজ, সার, কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। সার বা সেচে কোনো ঘাটতি ছিল না। কৃষকদের আগ্রহ, পরিশ্রম ও সরকারের সহায়তায় বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের ধানে ভালো দাম পাওয়া গেলে কৃষকদের মুখে হাসি আরও প্রশস্ত হবে। আমাদের লক্ষ্য কৃষকদের পাশে থেকে তাদের লাভবান করা।”