close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

কাশ্মীর আন্তর্জাতিক ইস্যু, ভারত একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: পাকিস্তান সেনাবাহিনী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ইস্যু কাশ্মীর নিয়ে ভারত এককভাবে কিছুই করতে পারবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। চীন, জাতিসংঘ ও কাশ্মীরিদের মতামতকে উপেক্ষা করে নয় — এই বার্তা দিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম..

কাশ্মীর ভারতের একক সম্পত্তি নয়, বলছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী – আন্তর্জাতিক সমাধানই একমাত্র পথ

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা ছড়াল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কড়া বার্তা। কাশ্মীর নিয়ে ভারত একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কাশ্মীর একটি ত্রিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক বিরোধ, যেখানে ভারত, পাকিস্তান ও চীন সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই সমস্যার সমাধান হতে হবে জাতিসংঘের রেজোলিউশন ও কাশ্মীরবাসীর মতামতের ভিত্তিতে।”

কাশ্মীর যুদ্ধ নয়, সত্য ও ন্যায়ের লড়াই

জেনারেল আহমেদ শরীফ সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রসঙ্গে বলেন, “এই লড়াই অস্ত্রের নয়, আদর্শ ও ন্যায়ের। এটি একটি পবিত্র সংগ্রাম এবং এই বিজয় আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে।”
তিনি এটিকে সাধারণ সীমান্ত সংঘর্ষ নয় বলে উল্লেখ করে বলেন, “ভারতের ভূখণ্ডগত দাবি ভিত্তিহীন। কাশ্মীরিদের মতামতই আসল।”

ভারতীয় মিডিয়ার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডার অভিযোগ

সাক্ষাৎকারে তিনি ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে বলেন, “পুলওয়ামা থেকে শুরু করে গোল্ডেন টেম্পলের ঘটনা – ভারতীয় মিডিয়া একতরফা প্রচার চালিয়েছে, যা সত্য থেকে বহু দূরে।”
তিনি জানান, “আমরা সব সময় নিরপেক্ষ তদন্ত ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের আহ্বান জানালেও ভারত সেটি এড়িয়ে গেছে।”

বিশেষ করে গোল্ডেন টেম্পলে কথিত হামলা নিয়ে তিনি বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও লজ্জাজনক। পাকিস্তান সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শিখ সম্প্রদায়ের জন্য আমাদের দেশের মাটিতে রয়েছে পবিত্র স্থান – নানকানা সাহিব, পানজা সাহিব ও করতারপুর।”

পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ‘টেক্সটবুক উদাহরণ’ সাফল্য

৬–৭ মে ভারত-পাকিস্তানের বিমান সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ কৌশল ছিল ক্লাসিক উদাহরণ – যা ভবিষ্যতের সামরিক শিক্ষায় স্থান পাবে।”
তিনি জেএফ-১৭ থান্ডার, জে-১০সি, ফাতেহ-১ ও ফাতেহ-২ মিসাইলের প্রশংসা করেন এবং বলেন, “পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা এখন প্রযুক্তিনির্ভর এবং আমরা আজও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সক্রিয়।”

ভারত ‘সন্ত্রাসের উৎসস্থল’?

ডিজি আইএসপিআর বলেন, “ভারত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক। হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির কারণে মুসলিম ও সংখ্যালঘুরা চরম নিপীড়নের শিকার। এই নিপীড়নের ফলেই প্রতিরোধ গড়ে উঠছে, আর ভারত সেই প্রতিরোধের দায় চাপাচ্ছে পাকিস্তানের ঘাড়ে।”

কাশ্মীর ও পানিসম্পদ: ভারতের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি

কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কাশ্মীর ভারতের একার নয় – চীন ও পাকিস্তান এর অংশ। এর সমাধান হবে জাতিসংঘের গাইডলাইন অনুসারে।”
ভারতের পানি বন্ধের হুমকির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, “কাশ্মীর থেকে ছয়টি প্রধান নদী প্রবাহিত হয় পাকিস্তানে। যদি কাশ্মীর পাকিস্তানের হয়, তাহলে ভারত নিজেই নিম্ন অববাহিকার দেশ হয়ে পড়বে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ভারত আবার আগ্রাসনের চেষ্টা করে, পাকিস্তানের জবাব হবে আগের চেয়ে দ্রুত ও কঠিন।”

কাশ্মীরের ন্যায্য সমাধান

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যখন কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাধান নিশ্চিত হবে।”
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, “এই সংকটকে তুচ্ছ করে দেখা চলবে না। এটি মানবাধিকার, জাতিসংঘ রেজোলিউশন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়।”


কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই অবস্থান নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের নীতির বিরুদ্ধেই এবার সরব হচ্ছে ইসলামাবাদ। আর এই উত্তেজনার মাঝে সমাধানের একমাত্র উপায় — আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে কাশ্মীরিদের সম্মানজনক ভূমিকা নিশ্চিত করা।

Tidak ada komentar yang ditemukan