close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

কারখানা সম্প্রসারণে ২১ কোটি টাকার জমি কিনছে অলিম্পিক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কারখানা সম্প্রসারণে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ২১ কোটি টাকায় জমি কিনছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। বিনিয়োগ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তে শেয়ারের দামও বেড়েছে ঢাকার বাজারে।..

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের অন্যতম বৃহৎ খাদ্য ও কনফেকশনারি প্রতিষ্ঠান অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটি প্রায় ২১ কোটি টাকায় ৭০২ ডেসিমেলেরও বেশি জমি কিনতে যাচ্ছে, যার বড় একটি অংশ গাজীপুরের কালীগঞ্জে অবস্থিত।

গতকাল রোববার (১৮ জুন) এই তথ্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজীপুরের কালীগঞ্জে অলিম্পিক ৬৬৮ ডেসিমেল জমি কিনবে যার জন্য ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে আরও সাড়ে ৩৩ ডেসিমেল জমি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। চার ধাপে এসব জমি ক্রয় করা হবে এবং সবগুলোই অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামেই নিবন্ধিত হবে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব জমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা হবে এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো ও বাজার চাহিদা অনুযায়ী নতুন উৎপাদন লাইন স্থাপন করা।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ দেশের বিস্কুট ও কনফেকশনারি বাজারে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে এনার্জি, এনার্জি প্লাস, নাটি, টিপ এবং পালস ক্যান্ডি। ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দেশের প্রতিটি প্রান্তে তাদের পণ্য সরবরাহ করছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মোট মূলধন প্রায় ২০০ কোটি টাকা। কোম্পানিটির শেয়ারের সংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি ৯৯ লাখ। শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ১৩ শতাংশ শেয়ার।

কোম্পানির সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে এবং কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করেছে ১৮৩ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) অলিম্পিক ব্যবসা করেছে প্রায় ২ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার এবং নিট মুনাফা অর্জন করেছে প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা।

এর মধ্যে শুধুমাত্র জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৬৫৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে এবং মুনাফা করেছে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। এই ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি কোম্পানিটির আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়েছে।

জমি কেনার ঘোষণা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গতকাল রোববার ঢাকার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য একদিনেই বেড়েছে আড়াই টাকা, যা প্রায় ২ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি। দিন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫২ টাকায়।

বিশ্লেষকদের মতে, জমি কেনা মানে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির নতুন ফ্যাক্টরি সম্প্রসারণ বা উৎপাদন লাইন চালুর প্রস্তুতি। এটি ভবিষ্যতে বিক্রি ও মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ফলে এই বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও কোম্পানির পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ আগামীর প্রতিযোগিতায় শক্ত অবস্থান নিতে প্রস্তুত। জমি কেনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তার উৎপাদন ও ব্যবসা সম্প্রসারণের যে সংকেত দিলো, তা দেশের শিল্প খাতের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।

कोई टिप्पणी नहीं मिली