কালিগঞ্জের বেনাদনায় শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

এস এম তাজুল হাসান সাদ avatar   
এস এম তাজুল হাসান সাদ
****

কালিগঞ্জের বেনাদনায় শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

এস এম তাজুল হাসান সাদ,কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা)

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ৬৩ নং বেনাদনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।সোমবার (১২ মে) সকালে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে নারী-পুরুষসহ স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ আছিয়া পারভীন আলো দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন এবং নিয়মিত পাঠদান থেকে বিরত থাকছেন, যা শিক্ষার মান ও পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।


মানববন্ধনে উপস্থিত একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সন্তানরা বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার আলো পাচ্ছে না। একজন আদর্শ শিক্ষকের যে গুণাবলি থাকা প্রয়োজন, তার মধ্যে তার একটিও নেই। আমরা তার বদলি চাই।”মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—“বেয়াদব শিক্ষিকার বদলি চাই”, “অযোগ্য শিক্ষিকার অপসারণ চাই” ইত্যাদি।


স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জমিদাতা সদস্য আরিফুজ্জামান লিটুর দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। আলো অভিযোগ করেন, লিটু অনিয়মের মাধ্যমে জমিদাতা সদস্য হয়েছেন। তবে লিটুর দাবি, ১৯৯২ সালে আদালতের রায়ে তাকে বৈধ জমিদাতা সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।


সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলাকালীন লিটু চারুকলা ও সংগীত বিষয়ে নম্বর দেওয়াকে কেন্দ্র করে আপত্তি তোলেন এবং প্রধান শিক্ষককে ওই দুটি বিষয়ের পরীক্ষা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেন। এর প্রেক্ষিতে আলো তার ফেসবুক পোস্টে লিটুকে “পাগল” আখ্যা দিয়ে অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করেন।


পরদিন আরিফুজ্জামান লিটু বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করতে গেলে নৈশপ্রহরী কাম অফিস সহকারী প্রিণ্টন এর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লিটু তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ উঠে। এর জের ধরে পরদিন আলো, তার স্বামী হুমায়ূন এবং মা মিলে আরিফুজ্জামান লিটুকে রাস্তায় গতিরোধ করে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


এই ঘটনায় উভয় পক্ষই কালিগঞ্জ থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।


অভিযুক্ত শিক্ষিকা আছিয়া পারভীন আলো বলেন, “আমি সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলি বলেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মানববন্ধনের নামে আমার সম্মানহানি করা হয়েছে।


বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, “শিক্ষিকা আলো আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছেন। আর আরিফুজ্জামান লিটু আমাদের কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করেছেন।


এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। নৈশপ্রহরীকে লাঞ্ছিত করার বিষয়েও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Walang nakitang komento


News Card Generator