ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি অমূল্য রত্ন হল কাদিগর জাতীয় উদ্যান। ভালুকা উপজেলার অন্তর্গত এই উদ্যান প্রাকৃতিকভাবে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হলেও পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধার অভাবে এখনো পর্যন্ত একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নিতে পারেনি। তবে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে-উদ্যোগী হয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন নাগরিকরা।
ভালুকা উপজেলার নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এক বার্তায় বলেন, “আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের কাদিগর জাতীয় উদ্যানকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এটি ঘিরে একটি টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে চাই আমরা।”
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই উদ্যানটি ভ্রমণ করছেন, তবে একটি আদর্শ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন, তা এখনো গড়ে ওঠেনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এর পর্যটন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয়দের মতে, কাদিগর জাতীয় উদ্যানকে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করতে নিচের কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও নিরাপদ করতে পাকা সড়ক ও সাইনবোর্ড স্থাপন। তথ্য কেন্দ্র, বিশ্রামাগার, টয়লেট, পানির ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য ট্রেইল, নেচার ওয়াক এবং গাইড সেবা চালু। স্থানীয় হস্তশিল্প ও খাবারের দোকান স্থাপন করে উদ্যোক্তা তৈরি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইউটিউব চ্যানেল, ডকুমেন্টারি ও ভ্রমণ কনটেন্ট নির্মাণ। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে সচেতনতামূলক সফরের আয়োজন।
পর্যটকদের মধ্যে কাদিগর জাতীয় উদ্যানের পরিচিতি বাড়াতে উপজেলা প্রশাসনের ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। আগত গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের উপহারস্বরূপ কাদিগর উদ্যানের দৃষ্টিনন্দন ছবি ফ্রেম করে উপহার দেওয়া হচ্ছে। এতে যেমন অতিথিদের মধ্যে উদ্যানের প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে, তেমনি এর বিকাশেও দৃষ্টি আকর্ষণ সম্ভব হচ্ছে।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে, কাদিগর জাতীয় উদ্যান শুধু ভালুকার নয় বরং সারা বাংলাদেশের একটি অনন্য পর্যটন গন্তব্যে রূপ নিতে পারে। এখন প্রয়োজন একঝাঁক কার্যকর উদ্যোগ ও দৃঢ় প্রত্যয়।