জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে দেশের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়াতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত টানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। কর্মসূচির মূল লক্ষ্য, সরকারকে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগ এবং ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কর্মসূচির বিস্তারিত ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করবে এবং ৫ আগস্ট দেশব্যাপী গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সভা, স্মরণ অনুষ্ঠান, দোয়া মাহফিল ও মতবিনিময় কর্মসূচি চালিয়ে যাবে জামায়াত। বিশেষ করে ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে রংপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল, তা আজও শেষ হয়নি। এই সনদের আদর্শ ও উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন,শহীদ আবু সাঈদ তাঁর সাহসিকতা, দূরদর্শিতা ও চেতনায় শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বকে আলোড়িত করেছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণ করতে রংপুরে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এসময় তিনি ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সমাবেশকে ঐতিহাসিক গণসমাবেশ” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন,
“জামায়াত ঘোষিত ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা এ সমাবেশ করছি।
কর্মসূচির বিস্তারিত তালিকা:
-
১ জুলাই: ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’-এর সূচনা
-
১৬ জুলাই: শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে রংপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া
-
১৯ জুলাই: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ
-
৫ আগস্ট: দেশব্যাপী গণমিছিল
-
৬-৮ আগস্ট: সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা
-
৮ আগস্ট: কর্মসূচির সমাপ্তি, প্রতীকী 'নতুন বাংলাদেশ দিবস' উদযাপন
দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারে অনৈতিক ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করা। তাঁরা দাবি করেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে ‘জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা’ এবং ‘জুলাই সনদের’ পূর্ণ বাস্তবায়ন।
জামায়াতে ইসলামীর এই টানা কর্মসূচি দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। সামনে জাতীয় সমাবেশ ও গণমিছিলের মতো বড় কর্মসূচি থাকায় প্রশাসনের প্রস্তুতি ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও এখন দেখার বিষয়।