চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজধানী ঢাকায় সংঘটিত রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় আহত হওয়া একদল শিক্ষার্থী ও তরুণ চিকিৎসাসেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে অংশ নেন।
প্রতিবাদকারীরা জানান, আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁদের অনেকের শরীরে এখনও স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। তবে দীর্ঘ চিকিৎসাজীবনেও তাঁরা কাঙ্ক্ষিত মানের চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।
হুইলচেয়ার ও ক্রাচে ভর করে আসা আন্দোলনকারীরা দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন। তাঁদের সঙ্গে আশপাশের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি আরও কয়েকজন ব্যক্তি সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন।
রোগীদের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রাফি হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “গত জুলাই মাসে আমি শ্যামলীতে গুলিবিদ্ধ হই। এরপর আগস্টেও একই ধরনের ঘটনায় আরও গুরুতর আহত হই। এখন আমার দুই হাতে শত শত স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। দিনরাত ব্যথায় কাটছে, কিন্তু এখনো অস্ত্রোপচার হয়নি।”
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা মূলত ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভর করেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। অথচ প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার বা পুনর্বাসন সেবা এখনও নিশ্চিত হয়নি।
প্রশাসনিক অবস্থান
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পঙ্গু হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতাল সর্বোচ্চ সক্ষমতা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে। যদিও এ নিয়ে সরাসরি হাসপাতাল পরিচালকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও বিস্তারিত বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুনঃদাবি ও কর্মসূচির ঘোষণা
আহতরা জানিয়েছেন, পরবর্তী চিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা নিয়মিতভাবে হাসপাতাল চত্বরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তাঁদের মতে, এটি কেবল তাঁদের চিকিৎসার দাবি নয়, বরং দেশের স্বাস্থ্যসেবার কাঠামোকে আরও মানবিক ও কার্যকর করে তুলবার একটি অনুরোধ।
মানববন্ধনকারীদের দাবি, প্রত্যেক নাগরিকের মতো তাঁরাও সংবিধানস্বীকৃত সুচিকিৎসার অধিকার প্রত্যাশা করেন। আন্দোলনের সময় আহত হলেও চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাঁদের যেন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত না করা হয়, সে বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা।