close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই আন্দোলন দমাতে ৩ লাখ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই আন্দোলনে ৩ লাখ গুলি ছোড়ার তথ্য ফাঁস। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু। ঢাকায়ই ছোড়া হয় ৯৫ হাজার গুলি।..

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি ভয়াবহ অধ্যায় উন্মোচিত হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন দমনে সারা দেশে ছোড়া হয় ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি — যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের নজির বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

এই দিনই শুরু হয় ইতিহাসের বহুল আলোচিত একটি বিচার প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনের সময় রাষ্ট্র পরিচালিত বাহিনী ঢাকায় ছুড়েছে ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড তাজা গুলি, যা ছিল পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন দমনের অংশ।” তিনি বলেন, “এটা কোনো বিচ্ছিন্ন প্রতিক্রিয়া ছিল না। এটা ছিল রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভেতর থেকেই গণবিরোধী নীলনকশার বাস্তবায়ন।

তিনি আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের সরাসরি নির্দেশেই এই সহিংসতা সংঘটিত হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের হাতে।

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন শুধু সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি শুনানিতে কোনো মন্তব্য না করে নিশ্চুপ ছিলেন। তার আইনজীবী ট্রাইব্যুনালকে জানান, মামলার এই পর্যায়ে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে চান না।

অন্যদিকে, পলাতক অবস্থায় থাকা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন বলেন, “আমার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে নির্দোষ প্রমাণ করে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রাষ্ট্রের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে হলেও আমি নিরপেক্ষভাবে সত্য উদঘাটনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিচারকগণ, রাষ্ট্রপক্ষ ও বিবাদীপক্ষের প্রতিনিধিরা। আদালতের ভেতরে ও বাইরে ছিল কঠোর নিরাপত্তা। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি করেছে এই মামলা।

বিচারক মণ্ডলী মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আগামী সোমবার, ৭ জুলাই। রাষ্ট্রপক্ষের তরফ থেকে বলা হয়েছে, “আরও অনেক প্রমাণ ও ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য রয়েছে, যা পরবর্তী শুনানিতে উপস্থাপন করা হবে।”

এই মামলার দিকে কেবল বাংলাদেশের নয়, আন্তর্জাতিক মহলেরও কড়া নজর। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এ মামলার রায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই বিচার প্রমাণ করবে, রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেও কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।” তারা সতর্ক করছেন, বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে, নইলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।

No comments found