close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই-আগস্ট গ'ণ'হ'ত্যা: শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মান''বতা'বি'রোধী অ'প'রাধে আনুষ্ঠানিক অ'ভি'..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ—জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরু..

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়াবহ রাজনৈতিক গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এক ঐতিহাসিক মোড় নিতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আগামীকাল (রোববার) আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করা হবে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শনিবার সাংবাদিকদের জানান, "আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে। বিচার এমনভাবে পরিচালিত হবে, যাতে কোনো পক্ষ এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।"

উল্লেখ্য, গত ১২ মে এই মামলার তদন্ত সমাপ্ত হয়। চিফ প্রসিকিউটর জানান, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে ১৪শ’ র বেশি মানুষ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে—এর মধ্যে রয়েছে হত্যার নির্দেশ, উসকানি ও পরিকল্পনা। একই অপরাধে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল এবং আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধেও প্রমাণ সংগ্রহ করেছে তদন্ত সংস্থা।

এই গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা হয় ১২ মে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনাই ছিলেন এই পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের মূল নির্দেশদাতা। তার নির্দেশেই নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়।

এর আগে, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ নির্দেশ দেন প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে অংশ নেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়, কীভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নিরস্ত্র ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে দমন করতে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। এতে প্রায় ১,৫০০ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মাধ্যমে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরই সিদ্ধান্ত নেয়, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার অবশ্যই হবে এবং অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর একই ঘটনায় দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ মামলার তদন্ত ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও একাধিক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ দাখিল করা হতে পারে।

এটি বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং জবাবদিহিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন বিচার সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, এই বিচার শুধু অতীতের অপরাধের জবাবদিহি নয়, ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক নিপীড়নের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেও বড় ভূমিকা রাখবে।

نظری یافت نشد