যুক্ত'রা'ষ্ট্রে'র সঙ্গে আপাতত বৈঠকের পরিকল্পনা নেই: ই'রা'ন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের ইঙ্গিত নাকচ করল ইরান। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট করল, এখন আলোচনার প্রশ্নই আসে না।..

তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা ফের চরমে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিস্ফোরক বার্তায় জানিয়ে দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপাতত কোনও আলোচনায় বসবে না। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, পাঁচ দফা আলোচনার পর হঠাৎ করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো হয়েছে, যা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে দেশের একটি কৌশলগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসাকে 'অযৌক্তিক' এবং 'অপরিণামদর্শী' বলে উল্লেখ করেছেন আরাঘচি। তিনি বলেন, “আমরা এখন এই প্রশ্নটাই করছি— যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসে আমাদের আদৌ কোনো লাভ হবে কি না? তারা আমাদের আস্থার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে এক বিবৃতিতে জানান যে, “আমরা ইরানের সঙ্গে আগামী সপ্তাহেই আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করছি।” কিন্তু আরাঘচির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে, তেহরান এই মুহূর্তে কোনো আলোচনায় যেতে আগ্রহী নয়। বরং তারা হামলার পরিণতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কূটনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করতে চায়।

হামলার বিষয়ে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের দাবি, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তারা নাকি ইরানের অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা ধ্বংস করে দিতে চায়। কিন্তু ইরান এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে আসছে। তেহরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু মাত্র শান্তিপূর্ণ, বেসামরিক ও বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হয়।

আরাঘচি আরও বলেন, “আমাদের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তাতে আমরা উল্লেখযোগ্য ক্ষতির মুখে পড়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এর পরেই আমাদের পারমাণবিক নীতির নতুন চেহারা কেমন হবে, তা ঠিক করা হবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই অবস্থান ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরান কূটনৈতিক কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। হামলার ঘটনার পর তারা নতুন প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক নীতির দিকে ঝুঁকতে পারে। পাশাপাশি, পারমাণবিক কর্মসূচিকে আরও গোপন ও সুরক্ষিত করার চেষ্টাও জোরদার হতে পারে।

তেহরানের এই সাফ বার্তা ওয়াশিংটনের জন্য এক ধরনের চাপ তৈরি করতে পারে। কারণ, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে— যার মধ্যে অন্যতম হলো ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখা।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে যাচ্ছে, তবে ইরানের বর্তমান মনোভাব স্পষ্টতই বলে দিচ্ছে যে, তারা আপাতত সামরিক চাপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েই ভাবছে— আলোচনা নয়।

এখন দেখার বিষয়, এই কূটনৈতিক সংঘাত ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে আরও বড় সংঘর্ষে রূপ নেয় কি না, নাকি আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতায় আবারো আলোচনার পথ খোলে।

No se encontraron comentarios