close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

যশোর শত কোটি টাকার মাদক উদ্ধার, মাদক ব্যবসা বন্ধে আস্তানা গুড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা..

সুভাষ মজুমদার avatar   
সুভাষ মজুমদার
যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চার মাসে ৫১৯টি অভিযান

মাদকমুক্ত যশোর গড়তে কাজ শুরু করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। তাদের কর্মতৎপরতায় গত চার মাসে উদ্ধার হয়েছে শত কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য। এরমধ্যে যশোরে রেকর্ড পরিমাণ একটি চালানে ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে। যার মূল্য ৬০ লাখ টাকা। একইসময়ে তাদের হাতে আটক হয়েছে ১৫৯ জন মাদক কারবারি ও মামলা হয়েছে ১৬৩টি। অধিদপ্তরের মোট ৫১৯টি অভিযানে এসব মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে কর্মকর্তারা। যশোরকে মাদকমুক্ত করার টার্গেট নিয়ে তারা মাঠে নেমেছেন। এ লক্ষ্য অর্জনে তারা প্রতিদিনই বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব অভিযানে আটক হচ্ছে মাদক কারবারি ও উদ্ধার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এতো বেশি সংখ্যক অভিযান ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার এরআগে কখনো হয়নি বলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত গত চার মাসে তারা জেলাব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। এ অভিযানের মোট সংখ্যা ছিল ৫১৯টি। অভিযানে তারা বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। এসব মাদকের মধ্যে সর্বোচ্চ রয়েছে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের ৩৫ হাজার ১০ পিস ইয়াবা, চার লাখ ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের ১৫৫ বোতল ফেনসিডিল, নয় লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের ৩২ কেজি ৭২৫ গ্রাম গাঁজা, ৬৮ হাজার টাকা মূল্যের ১৭ বোতল বিদেশি মদ, ৪২ হাজার টাকা মূল্যের ২১০ লিটার তাড়ী, আট পিস ট্যাপ্টোনডল ট্যাবলেট, ১৩ বোতল রেক্টিফাইয়েড স্পিরিট, নগদ ৬৭ হাজার টাকা ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত মাদকের মোট মূল্য এক কোটি ২০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।


এছাড়া, মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ১৫৯ জনকে অধিদপ্তরের সদস্যরা আটক করেছে। একইসাথে এসব ঘটনায় যশোর কোতোয়ালিসহ বিভিন্ন থানায় মোট ১৬৩টি মামলা দায়ের করা করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৭০ জনকে। এরমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫৯ জনকে ও বাকি ১১ জন পলাতক রয়েছে। এসব অভিযানের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা গত চার মাসে ১০৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। এসময় মাদকসহ হাতেনাতে আটক ব্যবসায়ীদের ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদন্ড ও জরিমানা প্রদান করেন।এদিকে, যশোরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে সবচেয়ে বড় মাদকের চালান আটক হয়েছে গত ৩০ মার্চ। অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আসলাম হোসেনের নেতৃত্বে যশোর-নড়াইল সড়কের হামিদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো, ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার পদমদী উত্তরপাড়ার মৃত দরবেশ শেখের ছেলে কামাল হোসেন ও তার ভাগনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার কালীশংকরপুর গ্রামের ছবদুল হকের ছেলে ইকলাস হোসেন। উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য ৬০ লাখ টাকা। ইয়াবার এতোবড় চালান এরআগে যশোরে কখনো আটক হয়নি বলে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সূত্রটি জানিয়েছে।এসব ব্যাপারে যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আসলাম হোসেন বলেন, যশোরে অবৈধ মাদকের ব্যবসা তিনি জিরো পর্যায়ে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তার সাথে কোন আপোষ নয়। প্রয়োজনে তিনি মাদকের আস্তানা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুড়িয়ে দেবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এযাবৎ কালের মধ্যে গত চার মাসে সর্বোচ্চ ৫১৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে সোয়া কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে ১৬৩টি মামলা ও ১৫৯ জন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। যশোরের আলোচিত মাদকের ব্যবসা ও আস্তানা নির্মূলের লক্ষ্যে এ অভিযান আরো জোরদার করা হবে বলে তিনি জানান।

Walang nakitang komento


News Card Generator