close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জেরুজালেম-তেল আবিবে ইরানি আগুনঝড়: সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত ৩০, ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলছে ইসরায়েল!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে কেঁপে উঠেছে ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চল। বীরশেবার একটি হাসপাতালের ছাদ ধসে আহত অন্তত ৩০ জন। হামলাকে সরাসরি ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। আতঙ্কে জনজীব..

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ফের চরমে! ইরানের নতুন করে পরিচালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আবারও কেঁপে উঠেছে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহর জেরুজালেম এবং তেল আবিব। বৃহস্পতিবার সকালের এই ভয়াবহ হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন, যাদের মধ্যে অন্তত দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF) নিশ্চিত করেছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সময়মতো শনাক্ত করেছে। ফলে সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে সাইরেন বাজানো হয় এবং জনগণকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকে যেতে নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পাশাপাশি 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত' আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করতে বলা হয়।

সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি লাগে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় বীরশেবা শহরের সোরোকা মেডিকেল সেন্টারে। ইরান থেকে নিক্ষিপ্ত একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি হাসপাতালে আঘাত হানায় ছাদের একটি অংশ ধসে পড়ে, আর তাতেই আহত হন বেশ কয়েকজন। হামলার পরপরই চিকিৎসক দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের চিকিৎসা শুরু করে।

এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উরিয়েল বুসো বলেছেন, “এই হামলা শুধু একটি সরাসরি আগ্রাসনই নয়, বরং ইরানি শাসকগোষ্ঠীর একটি ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ। সোরোকার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করেছে।  ২০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান, বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে মধ্য ইসরায়েল 

জেরুজালেম পোস্ট এবং ইসরায়েলের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে ইরানের মাটি থেকে একযোগে নিক্ষিপ্ত হয় কমপক্ষে ২০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। মধ্য ইসরায়েলের আকাশজুড়ে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, পাশাপাশি একাধিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে বলে রিপোর্ট এসেছে।

মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েন, অনেক এলাকায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সাইরেনের শব্দে কেঁপে উঠেছে তেল আবিবের আকাশও।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ডেভিড’স স্লিং’ ও ‘আয়রন ডোম’ পুরোপুরি সক্রিয় রয়েছে। অনেক ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝপথেই ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে, কিন্তু কিছু হামলা প্রতিহত করা যায়নি, যার ফলেই বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকা।

ইসরায়েলি জনগণকে সতর্ক করে আইডিএফ আরও জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। একইসাথে, আরও বড় ধরনের হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় ধরনের সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই পাল্টা জবাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং যেকোনো সময় ইরানি ভূখণ্ডে আক্রমণ চালাতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও মনে করছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।

এই হামলার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইরানকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘর্ষ নতুন মাত্রা নিয়েছে এই ব্যালিস্টিক হামলার মাধ্যমে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, এবার সাধারণ জনগণের জীবনও সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটিই এখন বিশ্বজুড়ে মূল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

没有找到评论


News Card Generator