close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন আয়া তুল্লা হ খা মেনি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল টানা চতুর্থ দিনের সংঘাতে উত্তপ্ত পুরো মধ্যপ্রাচ্য। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জেরে এবার সরাসরি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। তার এই ভাষণ হতে পারে ..

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এক নতুন মোড় নিচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত চতুর্থ দিনে প্রবেশ করেছে, আর পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ দিকে ধাবিত হচ্ছে। শুরুটা হয়েছিল গত শুক্রবার—ইসরায়েল একটি বিস্ময়কর হামলা চালায় ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায়। এরপর থেকে উভয়পক্ষ একে অপরকে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে পুরো অঞ্চলকে ঘিরে তুলেছে উত্তেজনার দাবানলে।

এমন এক সংকটময় সময়ে ইরান জানিয়েছে, তাদের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি খুব শিগগিরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা 'তাসনিম নিউজ' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, খামেনির ভাষণ জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যমের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, যেখানে তিনি ইসরায়েলের আগ্রাসন, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য দেবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ভাষণ শুধু ইরান নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ, বর্তমানে ইরান শুধু একটি দেশের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের সমর্থনপুষ্ট ইসরায়েল। খামেনি যদি এই ভাষণে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য আরও বড় এক যুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে।

ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নে কাজ করছে, যা আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে। অন্যদিকে, ইরান বারবার দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু এ নিয়ে উত্তেজনা বহুদিনের, আর শুক্রবারের হামলা ছিল সেই দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ।

হামলার পরে ইরানে জনরোষ চরমে উঠেছে। রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যেখানে জনগণ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিচ্ছে এবং খামেনির শক্ত অবস্থানের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এখনও সরাসরি অবস্থান না নিলেও, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে গোটা অঞ্চলই অনিয়ন্ত্রিত এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে।

খামেনিকে সর্বশেষ জনসম্মুখে দেখা গিয়েছিল সেই দিনেই, যেদিন ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় কেঁপে উঠেছিল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পরমাণু ঘাঁটি। তিনি তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তবে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেননি।

তাই এখন প্রশ্ন—তার আসন্ন ভাষণ কেবল জাতিকে আশ্বস্ত করার একটি কৌশল, নাকি এর মাধ্যমে তিনি ইসরায়েল এবং তার মিত্রদের উদ্দেশ্যে একটি চূড়ান্ত বার্তা দিতে যাচ্ছেন?

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ভাষণের পর হয়তো ইরানের পক্ষ থেকে বড় ধরনের পাল্টা হামলার ঘোষণা আসতেও পারে। এমনকি ইরানের হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্রদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এখন শুধু দুই রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট। আয়াতুল্লাহ খামেনির ভাষণ তাই শুধু একটি বার্তা নয়, বরং এটি হতে পারে যুদ্ধ-শান্তির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত।

বিশ্ব এখন অপেক্ষায়—খামেনি কী বলেন, আর তার পরিণতিই বা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

لم يتم العثور على تعليقات


News Card Generator