জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় সামিউলের সাফল্য: সাতক্ষীরার গর্ব

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার তরুণ উদ্ভাবক সামিউল আলিম তাজ জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রমাণ করেছেন, প্রযুক্তি ও সৃজনশীলতা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের গর্বিত করতে সক্ষম..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

বিজ্ঞান চর্চা এখন আর শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি আজ বাস্তব উদ্ভাবনে রূপ নিচ্ছে, এবং সাতক্ষীরার উঠতি প্রজন্মের হাতে সেটির প্রমাণ রেখে গেছেন সামিউল আলিম তাজ। সামিউল সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ও বিজ্ঞান মেলা ২০২৫-এ জুনিয়র গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খুলনার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের (ইংলিশ ভার্সন) অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রের উদ্ভাবন দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে।

এই উদ্ভাবনী প্রকল্পে সামিউল ভয়েস কমান্ড ব্যবহার করে গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ ও কৃষিকাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনার প্রযুক্তি উপস্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে একটি ঘরের নিরাপত্তা, আলো-তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, রান্না, দরজা-জানালা, সেচ ব্যবস্থা, পানির পাম্পসহ নানা কাজে স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিচারকমণ্ডলীর বিশেষ প্রশংসা অর্জন করেছে এই প্রকল্প।

উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে একের পর এক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর সামিউল খুলনা বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করে ঢাকায় জাতীয় পর্বে অংশ নেয়। ১৮-২০ জুন ঢাকার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। ২০ জুন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মোঃ মোকাবির হোসেন, সিনিয়র সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. সামিনা আহমেদ, চেয়ারম্যান, বিসিএসআইআর এবং সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত সচিব আবু সাঈদ মো কামরুজ্জামান, এনডিসি।

সামিউলের প্রকল্প ঘুরে দেখে সরাসরি প্রশংসা করেন দেশের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালহউদ্দিন আহমেদ। তার উপস্থিতি ও উৎসাহ প্রকল্পটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে। সামিউলের এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রভাষক মারুল মুশফিকুর রহমান-এর অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, 'এই কৃতিত্ব শুধু সামিউলের নয়, এটি সাতক্ষীরা তথা সমগ্র খুলনা অঞ্চলের অর্জন।'

সামিউল সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের সন্তান। তার বাবা টিপু সুলতান ও মা তাহেরা আক্তার সন্তানের এই অর্জনে গর্বিত। তারা জানান, 'ছোটবেলা থেকেই সামিউল প্রযুক্তিপ্রেমী এবং উদ্ভাবনী চিন্তায় আগ্রহী ছিল। এই সাফল্যে আমাদের পরিবার এবং জেলার জন্য আনন্দের।' সামিউল আলিম তাজের মতো শিক্ষার্থীরাই প্রমাণ করে, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার ও সৃজনশীলতা যদি লালন করা হয়— তাহলে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করাও সম্ভব।

তার এই কৃতিত্ব আগামী দিনের বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে এবং সাতক্ষীরাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে—এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

לא נמצאו הערות