কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই উইমেন্স ডে উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি পুনর্জাগরণ হতে দেখা যায়। এই অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবী সংগীত শিল্পী ও যোদ্ধা ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান বলেন, 'যারা জুলাই স্বীকার করে না, তারা আমাদের কেউ না। জুলাই কারো একার নয়; এটি আমাদের সবার। আমরা জুলাই বিক্রি করি না এবং কাউকে বিক্রি করতেও দেবো না।'
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এরপর প্রদর্শিত হয় দিপক কুমার গোস্বামীর 'স্পিকিং’ ও ‘জুলাই বিষাদ সিন্ধু’ চলচ্চিত্র।
আবহাওয়া বৈরী থাকা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন আইন সংসদ ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
জুলাই যোদ্ধা সায়ান 'এই মেয়ে শোন', 'আমি জুলাইয়ের গল্প বলবো’, 'আমার নাম প্যালেস্টাইন’ প্রভৃতি জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন শহীদ নাইমা সুলতানার মা সহ অন্যান্য জুলাই যোদ্ধারা। তারা বলেন, 'হাজার হাজার প্রাণের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীন দেশে আমরা নারীরা স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে চাই।'
জুলাই যোদ্ধারা বলেন, 'এই দেশে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার চাই এবং নারীর উপর যেন আর কোন অত্যাচার ও নিপীড়ন, ধর্ষণের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় জুলাই যোদ্ধারা আবারও শতগুণ হয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ জানাবে এবং নারীর অধিকার অর্জন করতে আন্দোলন করবে।'
অনুষ্ঠানে ব্যান্ডদল ইলা লা লা 'সংগতি’, ‘অচিরজীবির প্রার্থনা’, ‘বাঘের গান’ ও ‘নীল নির্বাসন’ গানসমূহ পরিবেশন করে। স্লোগান গার্লরা মঞ্চে এসে স্লোগান দেয়ার পর এফ মাইনর 'আলো আসবেই’, ‘মুক্তি’, ‘ডাহুক’ ও ‘মেয়ে’ গানসমূহ পরিবেশন করে। পরে শহীদ আবরার ফাহাদকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
পারসা মাহজাবীন 'চলো ভুলে যাই’, ‘মুক্তির মন্দির’ ও ‘মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম’ গান পরিবেশন করেন। শিল্পী এলিটা করিম 'আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’, ‘পলাশীর প্রান্তর’, ‘ঘুরে দাঁড়াও’ ও ‘বাংলাদেশ’ গানসমূহ পরিবেশন করেন। এভাবে, পুরো অনুষ্ঠানটি একটি স্মরণীয় ও প্রেরণাদায়ক সন্ধ্যায় পরিণত হয়।