close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় বড়দিনে উদযাপন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: avatar   
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শান্তি এবং জাতির সার্বিক সমৃদ্ধি কামনা করেছেন পোপের বাংলাদেশীয় প্রতিনিধি কার্ডিনাল প্যাটট্রিক ডি রোজারিও..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা: 
 
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শান্তি এবং জাতির সার্বিক সমৃদ্ধি কামনা করেছেন পোপের বাংলাদেশীয় প্রতিনিধি কার্ডিনাল প্যাটট্রিক ডি রোজারিও।
 
বড়দিন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সফরে এসে তিনি এই শুভ কামনার কথা জানান। সফরের অংশ হিসেবে কার্ডিনাল প্যাটট্রিক ডি রোজারিও সাতক্ষীরার বিভিন্ন খ্রিস্টান ধর্মপল্লী ও গির্জায় উপস্থিত হন। তিনি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে উপাসনায় অংশ নেন এবং যীশু খ্রিস্টের প্রেম, ত্যাগ ও মানবতার বাণী তুলে ধরেন। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সারাদিন তিনি জেলার একাধিক গির্জায় ঘুরে বড়দিনের উপাসনা ও আনন্দ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার '২৫) দুপুরে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সেনেরগাতি গির্জায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্ডিনাল ডি রোজারিও বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “বড়দিন আমাদের শেখায় ভালোবাসা, ক্ষমা ও শান্তির পথ। ধনী-গরীব, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে মানবতার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে উঠবে।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় একটি দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছে। এই সম্প্রীতি অটুট থাকুক এটাই তার প্রার্থনা।

এদিকে বড়দিনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা জেলার সব গির্জা ও খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটি গির্জায় র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যদের সার্বক্ষণিক পাহারায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। বড়দিনের উপাসনা ও উৎসব নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
শুধু গির্জাতেই নয়, বড়দিনের উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে খ্রিস্টান পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে। বাড়িতে বাড়িতে চলছে অতিথি বরণ, কেক কাটা, বিশেষ খাবার আয়োজন ও আনন্দ আড্ডা। শিশুদের জন্য রয়েছে নতুন পোশাক, উপহার ও নানা আনন্দ আয়োজন।

উপাসনায় যেমন ছোট-বড় সবাই মিলিত হয়েছেন, তেমনি আনন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন সকল বয়সের মানুষ।

শিক্ষার্থী রাখি বলেন, “বড়দিন মানেই আমাদের জন্য আনন্দ আর ভালোবাসার দিন। সবাই একসঙ্গে গির্জায় প্রার্থনা করি, তারপর পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটাই। আজ সত্যিই খুব ভালো লাগছে।”

কিশোর অর্ঘ্য বৈরাগী জানায়, “বড়দিনে নতুন জামা পাই, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করি। গির্জার অনুষ্ঠানগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে। এখানে সবাই মিলে আনন্দ করি।”

স্থানীয় বাসিন্দা টুরি সরদার জানায়, “বড়দিন আমাদের জীবনে শান্তি আর আনন্দ বয়ে আনে। ধর্মের পার্থক্য থাকলেও এই দিনে সবাই একে অপরের ঘরে যাই, শুভেচ্ছা বিনিময় করি।”

খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক পল সাহা জানান, “জেলায় দেড় শতাধিক গির্জা ও খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে বড়দিন উপলক্ষে রাত থেকেই উপাসনা ও আনন্দ আয়োজন চলছে। সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হচ্ছে।”

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় এবছর বড়দিনের আয়োজন আরও নিরাপদ ও আনন্দময় হয়েছে।

খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি স্বপন বৈরাগী বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “বড়দিন আমাদের জন্য শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি মানবতা ও সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। আমরা চাই, এই ভালোবাসা ও শান্তির চেতনা সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ুক।”

সব মিলিয়ে কার্ডিনাল প্যাটট্রিক ডি রোজারিওর সফর ও বড়দিনের উদযাপন সাতক্ষীরায় এনে দিয়েছে আনন্দ, আশা ও শান্তির বার্তা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এবারের বড়দিন।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator