জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নয়াহালট গ্রামে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষের বসবাস। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তো দূরের কথা, গ্রামের প্রধান রাস্তার বেহালদশা যেন এ জনপদের ভাগ্যকে দীর্ঘদিন ধরে বেঁধে রেখেছে।
২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় হিন্দুপাড়া এলাকায় অরুণ দাসের বাড়ি থেকে শুরু করে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ভয়াবহ ক্ষতি হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই ভাঙা রাস্তার কোনো দৃশ্যমান সংস্কার হয়নি। রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্ত, খানাখন্দ প্রতিদিনই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা।
এ রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করে গ্রামের আরাবিয়া মাদ্রাসার, দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এবং মহিলা মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী। এছাড়াও রয়েছে একটি শাহী ঈদগাহ, পাঁচটি মসজিদ, কয়েকটি কবরস্থান ও বেশ কয়েকটি নূরানী ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় অসুস্থ রোগী, শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের জন্য প্রতিটি দিনই যেন এক যুদ্ধ। নয়াহালট গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সমর্থক হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে এই গ্রামে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। এমপি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও কোনো বরাদ্দ পাননি তারা। এমনকি টিআর-কাবিখা প্রকল্পেও খুব কম বরাদ্দ এসেছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের এই মৌলিক সমস্যাটি থেকে গেছে অবহেলিত। স্থানীয় বাসিন্দা আরজদ আলী বলেন, বিগত তিন বছর ধরে আমরা রাস্তায় ভোগান্তির শিকার। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জানিয়েও কাজ হয়নি। আমাদের কষ্টের কথা কেউ শোনে না। কলেজ ছাত্র মুনসুর আল আজাদ বলেন, এই ভাঙা রাস্তাটার জন্য আমাদের প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। ছাত্রদের জন্য এটা বড় কষ্টের।
গ্রামের একটি মাদ্রাসার মুহতামিম বলেন, বিগত আমলে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু আমাদের গ্রামটা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে আমাদের এই দাবির বিষয়টি পৌঁছানোর। গ্রামবাসীদের প্রত্যাশা, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে এবার হয়তো বদলে যেতে পারে নয়াহালট গ্রামের রাস্তার বেহাল চিত্র। তাই তারা দাবি জানাচ্ছেন, দ্রুত এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংস্কার করে জনগণের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার।
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন, আগামী অর্থবছরে হিলিপ প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি, প্রস্তাব অনুমোদিত হলে আগামী অর্থবছরের মধ্যেই রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করা যাবে।
close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
ভাগ্য কি বদলাবে এবার?
Tidak ada komentar yang ditemukan



















