গাজীপুরের কালীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন জামায়াত কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে জামায়াত নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেন। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি এই সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
সংঘর্ষের পটভূমি
জামায়াত নেতাকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বাধা দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে অন্তত ১০ জন জামায়াত কর্মী আহত হন। পরে শুক্রবার ভোররাতে বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বিক্ষোভ ও আলটিমেটাম
শুক্রবার জুমার নামাজের পর গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসানের নেতৃত্বে কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিএনপির পার্টি অফিস ও কালীগঞ্জ থানা অতিক্রম করে খোদেজা কমপ্লেক্সের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত সমাবেশে জামায়াত নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জামায়াত নেতাদের বক্তব্য
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মাহমুদুল হাসান। সভা পরিচালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান।
উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নায়েবে আমির মো. আফতাব উদ্দিন, মাওলানা বদিউজ্জামাল, পৌরসভা আমির মাওলানা আমিমুল এহসানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “শুনেছি তারা (জামায়াতে ইসলামী) ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। তারা যা খুশি বলতে পারে, কিন্তু পুলিশের হাতে কোনো আলাদ্দিনের চেরাগ নেই যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের ধরে আনবে। যে যার মতো বলে, আর আপনারাও লেখেন।”
পরিস্থিতি উত্তপ্ত
জামায়াতের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পুলিশের পদক্ষেপ কী হয় এবং জামায়াত তাদের ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে কি না।