close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইউনূস সাহেব, পলিটিক্স আর ইকোনমিক্স এক জিনিস নয়: আন্দালিব রহমান পার্থ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আন্দালিব রহমান পার্থ ড. ইউনূসকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে বললেন, "পলিটিক্স আর ইকোনমিক্স এক জিনিস নয়!" রাষ্ট্র সংস্কার থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ—সবকিছুতেই উঠলো তীব্র প্রশ্ন। জনগণের ক্ষমতা কাকে দেওয..

গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ” — এই তিনটি শব্দ যেন আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আর এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি) আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় সবার নজর কাড়লেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।

আলোচনার শুরুতেই পার্থ যে মন্তব্যটি করেন, তা পুরো আলোচনা সভায় আলোড়ন তোলে। তিনি বলেন,
“সাহেব, পলিটিক্স আর ইকোনমিক্স এক জিনিস নয়। পলিটিক্সে ২ আর ২ হয় ২২, আর ইকোনমিক্সে ২ আর ২ হয় ৪।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি পরোক্ষভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্র সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গিকে কটাক্ষ করেন।

তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন:
“আপনি বলছেন রাষ্ট্র সংস্কার করবেন। কিন্তু কিসের সংস্কার? এটা কি শুধুই একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী, যেমন এনসিপিকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা?”
এই প্রশ্নে অনেকেই হতবাক হলেও, রাজনৈতিকভাবে তিনি একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন—রাষ্ট্র সংস্কারের নামে একচেটিয়া কর্তৃত্ব বা সুবিধাবাদ যেন প্রতিষ্ঠা না পায়।

ড. ইউনূসের আশপাশে থাকা উপদেষ্টাদের নিয়েও পার্থের বক্তব্য ছিল তীক্ষ্ণ।
“আপনার উপদেষ্টাদের নাম দেশের মানুষ চেনে না। তারা জানে না কারা তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে,”—এই মন্তব্যে সরকারের স্বচ্ছতা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে।

তিনি ইঙ্গিত করেন, সরকার পরিচালনায় যারা যুক্ত, তারা জনগণের কাছে অজানা, অচেনা। এ ধরনের গোপন শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্রের পরিপন্থী বলেই তিনি মনে করেন।

আন্দালিব রহমান পার্থ দাবি করেন,

  • ২৮ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন,

  • গার্মেন্টস খাত মারাত্মক সংকটে,

  • ব্যবসায়ী সমাজ এনবিআরের জটিলতা ও কর সংস্কারে বিপর্যস্ত

তার বক্তব্য অনুযায়ী, সরকারের কাছে এসব সমস্যা যেন একেবারেই গুরুত্বহীন। কার্যকর কোনো নীতি বা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই সংকটগুলো দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা
পার্থ বলেন,
“নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দেওয়ার কারণে দেশে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগ থেমে গেছে, প্রশাসনের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।”
তিনি ড. ইউনূসকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন,
“আপনি কি জাতিকে একটি লটারির মধ্যে ফেলে দেবেন?”

এরপর তিনি দাবি করেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
“সব কিছু একটি সঠিক লাইনে ফিরিয়ে আনতে হলে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জরুরি। মানুষ জানতে চায় সামনে কী আসছে।”

আন্দালিব রহমান পার্থ স্পষ্ট করে বলেন,
“আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ‘ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’। আর বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল এখনও রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করে।”

তিনি যুগপৎ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন,
“আমরা জানি, নির্বাচনই একমাত্র পথ। জনগণকে ক্ষমতায় আনার মাধ্যম এটি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।”

শেষে পার্থ ড. ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,
“আপনি রাজনীতিক নন। আপনার আসল সম্পদ হল ইন্টেগ্রিটি ও ক্রেডিবিলিটি। সেটি হারাবেন না।”
তিনি বলেন,
“মানুষ আজও আপনাকে সম্মান করে। আপনি যদি জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতেই ফিরিয়ে দেন, তবে সেই সম্মান আপনি ধরে রাখতে পারবেন।”

আন্দালিব রহমান পার্থর এই বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। রাজনৈতিক সংশয়, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং নেতৃত্বের স্বচ্ছতা—এই তিনটি বিষয়ে তার প্রশ্ন ও দাবিগুলো এখন জনমনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ড. ইউনূস কীভাবে জবাব দেবেন, এবং রাজনৈতিক মাঠে কী পদক্ষেপ নেবেন—তা সময়ই বলবে।
কিন্তু একথা নিশ্চিত, এই বক্তব্য বাংলাদেশ রাজনীতিতে নড়াচড়া ফেলেছে।

Комментариев нет