কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের স্বনামধন্য গোরখোদক এবং প্রবীণ সমাজসেবক মনু মিয়া আর নেই। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর এবং তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
মনু মিয়া তাঁর জীবদ্দশায় ৩ হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়ে মৃতদের দাফনে অংশ নিয়েছেন। তাঁর এই নিঃস্বার্থ কাজের জন্য এলাকাবাসীর কাছে তিনি এক মানবিক প্রতীক ও দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন, ইটনা উপজেলা এবং আশপাশের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম বলেন, 'মনু চাচা ছিলেন একজন বিনয়ী, ধর্মভীরু এবং দায়িত্ববান মানুষ। দাফন কাজকে তিনি শুধুমাত্র পেশা নয়, ইবাদত হিসেবে দেখতেন। তাঁর চলে যাওয়া আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।' বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তাঁর মৃত্যুতে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং পরিচিতজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট দোয়া চাওয়া হয়েছে।
মনু মিয়া চাচার অবদান শুধু জয়সিদ্ধি ইউনিয়নেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁর কাজের পরিধি এবং এর প্রভাব অন্যান্য উপজেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের দাফনের কাজে আজীবন নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন। এমন একজন মানুষকে হারানো সমাজের জন্য এক বিরাট ক্ষতি। তাঁর এই আত্মত্যাগ এবং সমাজসেবার প্রতি নিবেদন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর মতে, 'মনু মিয়ার মতো ব্যক্তিরা সমাজের অন্ধকারে আলোর দিশারী। তাঁদের কাজ এবং অবদান সমাজের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের জীবন থেকে আমাদের বহু কিছু শেখার আছে।' ভবিষ্যতে মনু মিয়ার কাজের আদর্শ অনুসরণ করে সমাজের আরও বহু মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আশা করা যায়।