রাজনীতির উত্তাল সময় পেরিয়ে এবার সরাসরি বিপ্লবের ডাক দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের সংগঠক মেহরাব সিফাত।
গত শুক্রবার (২৩ মে) রাত ১০টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট তালুকদার ডিজিটাল প্লাজায় অনুষ্ঠিত এনসিপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ঘোষণা করেন— "চব্বিশের ছাত্র-জনতা ইতিহাস গড়তে প্রস্তুত। যদি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পথ রুদ্ধ হয়, তাহলে এই জনগণ নিজেরাই বিপ্লবী সরকার গঠন করবে।"
তিনি বলেন, “আমরা যারা ২০২৪ সালে রাজপথে রক্ত দিয়েছি, তারা সেই আত্মত্যাগ ড. ইউনূসের হাতে সঁপে দিয়েছি। এখন যদি কোনো বৈদেশিক চক্রান্ত অথবা ঘরোয়া চাপে তাকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়— তাহলে সেই বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এই বাংলার মাটিতে লেখা থাকবে। কিন্তু সেই ইতিহাসেই ছাত্র-জনতা গড়বে নতুন অধ্যায়— একেবারে বিপ্লবী সরকারের।”
নতুন সমাজ, নতুন রাষ্ট্র কাঠামোর ঘোষণা:
মেহরাব সিফাত সভায় আরও বলেন, “এই জাতির নতুন বন্দোবস্ত, নতুন সমাজ ব্যবস্থা, রাজনৈতিক কাঠামো এবং শিক্ষা সংস্কারের রোডম্যাপ তৈরি না করেই যদি ড. ইউনূস বিদায় নেন, তবে সেটি হবে চব্বিশের শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা সেটা কখনোই মেনে নেব না।”
তিনি ছাত্র ও জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “মনে রাখবেন, আপনারা দায়িত্ব শেষ করেননি। এখনো সময় এসেছে আরও শক্তিশালী সংগঠনের। যারা রাজপথে রক্ত দিয়েছেন, তারা ঘরে ফিরবেন না। ১৭ বছরের আওয়ামী শাসনের জাহিলিয়াত আমরা দেখেছি। এবার সে অন্ধকার থেকে আলোতে ওঠার সময়।”
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের ডাক:
সিফাত বলেন, “এই আন্দোলন ধ্বংসের জন্য নয়— গঠনের জন্য। আমরা ভাঙার রাজনীতি চাই না। এবার চাই নতুন কিছু গড়ার ইতিহাস। দল-মত নির্বিশেষে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে একত্রিত হতে হবে।”
সভায় অংশগ্রহণকারীদের অবস্থান ও বক্তব্য:
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিসি) সদস্য আজগর শেখ।
সভাটি পরিচালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাদারীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ।
উপস্থিত ছিলেন:
-
সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ,
-
জাতীয় নাগরিক কমিটির রাজৈর উপজেলার সদস্য মহাসিন ফকির,
-
জাবের হাওলাদার,
-
এবং রাজৈর উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আফরান জামি।
সবাই একমত হন যে— সময় এসেছে পরিবর্তনের, সময় এসেছে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী শক্তিকে রাজনৈতিক কাঠামোতে রূপান্তর করার।
বাংলার রাজনীতিতে বড় ধরনের মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দিয়ে ছাত্র-জনতা এবার ঘোষণা দিয়েছে— ইতিহাস গড়তে তারা প্রস্তুত। ড. ইউনূস থাকুন বা না থাকুন, এবার তারা নিজেরাই গড়বে বিপ্লবী সরকার।
এখন দেখার বিষয়— ভবিষ্যতের পথচলায় এই ঘোষণা কীভাবে বাস্তবায়িত হয়, এবং রাজনৈতিক ময়দানে কী প্রভাব ফেলে!



















