গাজায় দুই বছরব্যাপী দীর্ঘ সামরিক অভিযানের পর এবার নিজ দেশের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের বাসভবন ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো ইসরায়েলি নাগরিক ও বিরোধী দলীয় নেতৃত্ব। তাদের ক্ষোভের মূল কারণ হলো—নেতানিয়াহুর আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার আবেদন। তবে এই আবেদনে প্রধানমন্ত্রী তার কোনো ভুল স্বীকার করেননি, এমনকি কোনো অনুশোচনাও প্রকাশ করেননি।
প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর এমন আবেদনকে 'নজিরবিহীন' হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। জালিয়াতি, ঘুষ ও আস্থা ভঙ্গের গুরুতর অভিযোগে তিনটি পৃথক মামলায় বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী তার সব অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' এবং 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে দাবি করে আসছেন। তার সমর্থকদেরও একই মত।
বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীকে উপহাস করে নানা প্রতীকী প্রতিবাদ জানায়। এক বিক্ষোভকারী কয়েদিদের ব্যবহৃত কমলা রঙের জাম্পস্যুট পরে অংশ নেন, অন্যদিকে আরেক দল বিক্ষোভকারী 'ক্ষমা করুন' লেখা কলার স্তূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন—যা নেতানিয়াহুর দোষ স্বীকার না করে ক্ষমা চাওয়ার প্রচেষ্টাকে ব্যঙ্গ করে।
এদিকে, এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্বীকার করেন যে, তার বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া দেশকে 'ভেতর থেকে ভেঙে দিচ্ছে' এবং 'তীব্র বিভাজন' তৈরি করছে। তিনি বলেন, 'জাতীয় স্বার্থ' দাবি করেছে বলেই তিনি বিচার প্রক্রিয়ার শেষ দেখতে চাননি। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা এই আবেদনের 'জাতীয় ও আইনি গুরুত্ব' বিবেচনা করে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মতামত নেওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। এটি ইসরায়েলের রাজনীতিতে এক নতুন মোড় এনে দিয়েছে, যেখানে একজন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিচার এবং ক্ষমা চাওয়া দেশটিকে গভীর মেরুকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে।



















