close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েল পারমাণবিক আক্রমণ করলে পাকিস্তানও পরমাণু হামলা চালাবে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে। ইসরায়েল যদি ইরানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে পাকিস্তানও পারমাণবিক হামলায় জড়াবে—এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন ইরানের শীর্ষ জেনারেল মহসেন রেজায়ি। তার মতে, পাকিস্তান ..

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ এখন ক্ষেপণাস্ত্রের তীব্র শব্দে প্রকম্পিত। টানা কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান হামলা ও পাল্টা হামলা পরিস্থিতিকে এমন এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে, যেখান থেকে শুধু একটি পারমাণবিক বিস্ফোরণই যুদ্ধকে বৈশ্বিক রূপ দিতে পারে।

গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল আচমকা তেহরানসহ ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। প্রতিক্রিয়ায়, ইরানও তীব্র প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও বেসামরিক এলাকায়।

এই উত্তপ্ত পরিবেশেই ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (IRGC) সিনিয়র জেনারেল মহসেন রেজায়ি এক ভয়াবহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি সরাসরি বলেন, “ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তবে পাকিস্তানও পারমাণবিক আক্রমণে অংশ নেবে।”

 

একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জেনারেল রেজায়ি বলেন, পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ইরানকে এই বিষয়ে ‘আশ্বস্ত’ করেছে। তার ভাষায়, “পাকিস্তান বলেছে—ইসরায়েল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করলে, তারাও চুপ করে থাকবে না। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা আক্রমণে যাবে।”

এই বক্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে দুই দেশের প্রায় ২৫০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। রেজায়ির মতে, “তেহরান এখনও তার গোপন শক্তির সবটা প্রকাশ করেনি।” এই মন্তব্য নতুন করে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরানের হাতে এখনও ভয়ঙ্কর অস্ত্র ও সামরিক কৌশল মজুত রয়েছে।

 

যদিও পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই পারমাণবিক সমর্থনের কথা বলেনি, তবে বিভিন্ন সূত্র এবং ইরানি সেনা কর্মকর্তার দাবির ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ইরানকে একটি মৌখিক সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম NDTV তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, এই আশ্বাসকে সরাসরি সামরিক প্রতিশ্রুতি না বলে বরং কৌশলগত কূটনৈতিক সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্বের মাত্র নয়টি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে—এদের মধ্যে ইসরায়েল ও পাকিস্তান দুইটিই আছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ICAN (International Campaign to Abolish Nuclear Weapons) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

 

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোও কৌশলগতভাবে এই সংঘাতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে শান্তিচুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করে, তাহলে “মার্কিন সেনাবাহিনী এমন শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে, যা ইতিহাসে আগে কখনও দেখা যায়নি” বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

 

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, “পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে ভয়াবহ ভুল করছে। এটি একটি বেপরোয়া রাষ্ট্র, যার পারমাণবিক ক্ষমতা পুরো বিশ্বকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে।”

 

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যদি সত্যি ইসরায়েল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে এবং পাকিস্তান পাল্টা জবাব দেয়, তবে তা হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা।

এই মুহূর্তে কূটনৈতিকভাবে যে যার অবস্থান স্পষ্ট করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—একটি ভুল সিদ্ধান্ত, একটি উস্কানি, কিংবা একটি পারমাণবিক বোমা বিশ্বকে অন্ধকারের অতল গহ্বরে ঠেলে দিতে পারে।

Geen reacties gevonden


News Card Generator