ইরানের আরাক হেভি ওয়াটার পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের আরাক হেভি ওয়াটার পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পাল্টা জবাবে ইরান ছুড়েছে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। জেরুজালেম ও তেল আবিবে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে গোটা অঞ্চল। মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হত..

মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এক নতুন এবং ভয়াবহ মোড় নিয়েছে। ইসরায়েল সরাসরি ইরানের গুরুত্বপূর্ণ আরাক হেভি ওয়াটার পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, যারা ইরানের জাতীয় টেলিভিশনের সূত্র উল্লেখ করেছে।

ঘটনার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেয়— আরাক চুল্লির পার্শ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ যেন অবিলম্বে স্থান ত্যাগ করে। এরপরই আসে বিস্ফোরণের খবর, যা স্পষ্টতই ইসরায়েলের সামরিক হুমকিকে বাস্তবে রূপ দেয়।

আরাক চুল্লিটি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। ২০১৫ সালে ছয় জাতির পরমাণু চুক্তির অংশ হিসেবে ইরান এ চুল্লির ডিজাইন পরিবর্তনে সম্মত হয়েছিল। এই হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর মূলত পারমাণবিক জ্বালানি ঠাণ্ডা রাখার জন্য ব্যবহৃত হলেও, এর উৎপাদিত পার্শ্ব পদার্থ প্লুটোনিয়াম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য— যা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের উদ্বেগ দীর্ঘদিনের।

তবে এই হামলা একতরফা থাকেনি। ইরান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত হেনেছে। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, কমপক্ষে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে আঘাত হানে, যার ফলে কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, জেরুজালেম ও তেল আবিবে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং স্থানীয় জনগণ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির সংকেত বহন করছে। একদিকে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে বহুদিন ধরে উদ্বিগ্ন ইসরায়েল, অন্যদিকে ইরানও নিজের নিরাপত্তা প্রশ্নে আগ্রাসী জবাব দিতে প্রস্তুত। দুই দেশের মধ্যে এমন সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ অঞ্চলজুড়ে আরও বৃহৎ পরিসরের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

হামলার পরপরই বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন উভয় পক্ষকেই সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। হোয়াইট হাউস থেকেও এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, “এই পরিস্থিতি গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং এটি অবিলম্বে কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা প্রয়োজন।

ইসরায়েলের আরাক পারমাণবিক চুল্লিতে হামলা এবং ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিক্রিয়া এমন এক সময় ঘটলো যখন গোটা অঞ্চল উত্তপ্ত। এই পরিস্থিতির স্থায়ীত্ব বিশ্বের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে এক বিপজ্জনক মোড়ে, যেখানে সামান্য ভুল সিদ্ধান্ত বড় ধরনের যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিতে পারে।

لم يتم العثور على تعليقات