close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরানে অস্ত্র ভরা বিমান পাঠিয়েছে চীন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চীনের একটি রহস্যময় কার্গো বিমান তেহরানে অবতরণের পরই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আলোড়ন। রাডার ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে বিমান অবতরণ কি চীনের নতুন সামরিক কৌশল? ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে এবার সরাসরি চীনের সম্পৃক্ততা ক..

মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে চীনের একটি গোপন মিশন। সম্প্রতি ইরানের রাজধানী তেহরানে অবতরণ করেছে চীনের একটি কার্গো বিমান, যেটি আকাশপথে থাকাকালীন সময়েই ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে বিমানটির অস্তিত্ব রাডারে ধরা পড়েনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়—তবে কি চীন গোপনে ইরানকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে?

ভারতের একটি প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকম জানায়, ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করে বিমান অবতরণ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি সাধারণত গোপন সামরিক অভিযান বা বিশেষ গোয়েন্দা মিশনের অংশ হিসেবে দেখা যায়। এমনকি কিছু সূত্রে দাবি, বিমানটিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্রের যন্ত্রাংশ কিংবা যুদ্ধসংক্রান্ত প্রযুক্তি ছিল—যা ইরানের বর্তমান যুদ্ধ প্রস্তুতির জন্য চূড়ান্ত সহায়তা হতে পারে।

চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে 'অহিংস হস্তক্ষেপ' একটি মূলনীতি হলেও ইরান ইস্যুতে দেশটি বরাবরই তেহরানের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকেছে। তবে এবার যদি সত্যিই গোপনে অস্ত্র সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে, তবে তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই নয়, বরং গোটা পশ্চিমা জোটকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার নামান্তর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন ইতোমধ্যে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে একটি অলিখিত কৌশলগত জোটে আবদ্ধ হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-ইরান যৌথ সামরিক মহড়া, বাণিজ্যিক সমঝোতা ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের ঘটনাগুলো তা প্রমাণ করে। চীনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্য বিবৃতি না এলেও, বিমান অবতরণের ধরন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের একটি বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে। ইরানের সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে চালানো হয় একের পর এক আকাশ হামলা। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ঘাঁটি ধ্বংস করতে এই অভিযান চালিয়েছে।

এই হামলার পরই তেহরানের প্রতি একাধিক মুসলিম ও পূর্বাঞ্চলীয় দেশের সমর্থন আসতে থাকে। বিশেষ করে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব থেকে কূটনৈতিকভাবে একরকম সংহতি প্রকাশ পায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কিন্তু চীনের সরাসরি বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত হুমকি হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, এই ধরণের গোপন সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং তা রাশিয়া-চীন-ইরান অক্ষকে আরও শক্তিশালী করছে।

চীনের এই একক কর্মকাণ্ড গোটা ভূরাজনৈতিক চিত্র বদলে দিচ্ছে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েল, অন্যদিকে ইরান, রাশিয়া, চীন ও তুরস্ক—যারা যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি না এলেও একে অপরকে কৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চীন যদি প্রকাশ্যে ইরানকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়া শুরু করে, তাহলে তা শুধুই মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বকে এক নতুন স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ না কাটতেই চীন-ইরান ইস্যুতে উত্তপ্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ।

চীনের কার্গো বিমান কি কেবল পণ্যবাহী ছিল, নাকি এটি যুদ্ধের বার্তা বহন করে এনেছে—তা নিশ্চিত নয়। তবে একটি কথা স্পষ্ট, বিশ্বের রাজনীতিতে নতুন করে ভাঙা-গড়ার সময় আসছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এখন আর আঞ্চলিক সংকট নয়—এটি হয়ে উঠছে বৈশ্বিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু।

לא נמצאו הערות


News Card Generator