মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহে যেন বিস্ফোরণ ঘটতে যাচ্ছে। শুক্রবার (২০ জুন) এক প্রকাশ্য বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ঘোষণা দিয়েছেন, তার দেশ এখন থেকে ইরানের ‘সরকারি অবকাঠামো’ ও ‘ক্ষমতার প্রতীক’ — অর্থাৎ, সরাসরি সরকারের মূল স্তম্ভগুলোর ওপর আঘাত হানবে।
এটি শুধু একটি হুমকি নয়, বরং ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে এক মৌলিক ও বিপজ্জনক পরিবর্তনের প্রতীক। আগে যেখানে ইসরায়েল কৌশলগতভাবে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করতো, এখন লক্ষ্য স্থির হয়েছে আরও গভীরে — ইরান সরকারের ভিত্তিকে ভেঙে ফেলা।
নিজের বিবৃতিতে কাৎজ বলেন,-আমরা আঘাত হানব ইরান সরকারের প্রতিটি প্রতীক, বিপ্লবী গার্ড, মিলিশিয়া এবং তাদের দমনমূলক ক্ষমতার প্রতিটি উপকরণের ওপর।
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি এক রকম যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। ইসরায়েল এখন আর কেবল প্রতিরক্ষা নয়, সরাসরি আক্রমণের কৌশল নিচ্ছে।
এরও আগে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাৎজ আরেকটি চাঞ্চল্যকর বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেন,-আমাদের মূল লক্ষ্য এখন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জীবননাশ।
এ ধরনের সরাসরি হত্যার হুমকি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও ভয়াবহ। এটি ইসরায়েলি-ইরানি দ্বন্দ্বকে এক রক্তক্ষয়ী পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এমন আগ্রাসী ঘোষণা ইরানকে আরেক ধাপ প্রতিক্রিয়াশীল ও আক্রমণাত্মক করে তুলতে পারে।
ইরান যদি এই হুমকির জবাবে সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তাহলে এই দ্বন্দ্ব শুধুমাত্র দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না — বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
এর প্রভাব পড়বে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন এমনকি ইয়েমেন পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য 'রেজিম চেঞ্জ' — অর্থাৎ, ইরানে সরকারের পতন ঘটানো।
এই ধরনের খোলাখুলি ক্ষমতার পালাবদলের ঘোষণা শুধুই রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াবে না, বরং এক ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষের সূচনা ঘটাতে পারে।
এই ঘটনার পর এখন নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার দিকে।
বিশ্ব নেতারা কি শান্তির পথে আহ্বান জানাবেন, নাকি এই দুই শক্তিধর দেশের সংঘাতে তারা পক্ষ নেবেন — তা এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে স্পষ্টতই বলা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যুদ্ধের মেঘ জমেছে।
যদি পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত না করা যায়, তাহলে পৃথিবী আরও এক বড় রকমের যুদ্ধের মুখোমুখি হতে পারে।
ইসরায়েল এবার সত্যিকারের যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। ইরানের সরকার ও সর্বোচ্চ নেতাকে সরাসরি টার্গেট করে যেভাবে হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক নয় — পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তাকে নড়ে চড়ে দিতে পারে।