close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরান দূতাবাসের শোক বইয়ে জামায়াতের স্বাক্ষর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় শোক জানাতে ঢাকার ইরান দূতাবাসে শোক বইতে স্বাক্ষর করেছে জামায়াত। সরাসরি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।..

ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের দূতাবাসে সোমবার (৩০ জুন) সকালে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যের জন্ম হয়। ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় নিহতদের স্মরণে খোলা শোক বইতে স্বাক্ষর করতে হাজির হন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানে অবস্থিত দূতাবাসে গিয়ে তারা হামলায় নিহতদের জন্য গভীর শোক, সংহতি ও প্রতিবাদ জানান।

জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদলে অংশ নেন দলের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এবং দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। তারা সরাসরি ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান।

প্রতিনিধিদল জানায়, “যুদ্ধবাজ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে ইরানের ওপর সরাসরি আগ্রাসন চালিয়েছে। এ হামলা ছিল পরিকল্পিত, নিষ্ঠুর এবং মানবতাবিরোধী।” তারা বলেন, “ইরানের বহু সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী ইসরায়েলি হামলায় শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”

এই সাক্ষাতে জামায়াত নেতারা ইরানের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এই হামলাকে শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য বড় বিপদ হিসেবে বিবেচনা করে। দলটি আরও জানায়, মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজন আজ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

ডা. তাহের ইরান দূতাবাসে সংরক্ষিত শোক বইতে স্বাক্ষর করেন এবং নিহতদের ‘শহীদ’ হিসেবে কবুল করার জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেন। তিনি লেখেন, “এই শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। মুসলিম উম্মাহর ওপর কোনো আগ্রাসন সফল হবে না।” পাশাপাশি, নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য ধৈর্য প্রার্থনা করেন।

রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোসি জামায়াত নেতাদের এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ইরানের পাশে থেকেছে। আজও এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহমর্মিতা ও প্রতিবাদ আমাদের শক্তি জোগায়।” রাষ্ট্রদূত জামায়াত নেতাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এই সাক্ষাৎ ও শোকবার্তা কূটনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় দুটি রাষ্ট্র—বাংলাদেশ ও ইরান—বর্তমানে ধর্মীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক সংহতির মাধ্যমে একটি গভীর সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এধরনের কূটনৈতিক বার্তা একদিকে যেমন দলের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ইসলামী দলগুলোর ভূমিকারও পরিচায়ক।

একটি প্রশ্ন আজ অনেকের মনে—বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী এখন থেকে আন্তর্জাতিক ঘটনাবলিতে আরও সক্রিয় অবস্থান নেবে? জামায়াতের এই কূটনৈতিক তৎপরতা তারই একটি ইঙ্গিত হতে পারে।

Ingen kommentarer fundet