close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইয়েমেনে মার্কিন হামলার আগুন, ৮০’র বেশি নিহত: লোহিত সাগর ঘিরে বাড়ছে যুদ্ধের উত্তাপ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
হোদাইদাহ ও রাস ইসা বন্দরে মার্কিন বাহিনীর বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছে ৮০ জনেরও বেশি, আহত শতাধিক। হুতিদের প্রতিরোধ বন্ধের লক্ষ্যে চালানো এই হামলা উল্টো ইয়েমেনকে ঠেলে দিচ্ছে আরও বড় সংঘাতের দিকে।..

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ফের ইয়েমেনের আকাশে আগুন ঝরাল। শনিবার নতুন করে হোদাইদাহ প্রদেশের বন্দর ও বিমানবন্দর লক্ষ্য করে চালানো হয় ১৩টি বিমান হামলা। হুতি-সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ জানিয়েছে, হামলাগুলোর লক্ষ্য ছিল কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হোদাইদাহর অবকাঠামো।

এই হামলার মাত্র কয়েক দিন আগেই, ১৭ এপ্রিল, রাস ইসা বন্দরে চালানো যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বড় হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৮০ জন এবং আহত হয়েছে ১৫০ জনের বেশি। তখনও মূল টার্গেট ছিল ইয়েমেনের প্রধান তেলবন্দর এবং তেল পাইপলাইন অঞ্চল। আহতদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন মানবিক সহায়তা কর্মী, যাদের উপস্থিতি ছিল উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার কাজে।

নতুন হামলার পর এবার রাজধানী সানার আল-থাওরা, বানি মাতার ও আল-সাফিয়াহ এলাকাতেও লক্ষ্য করে চালানো হয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এতে নিহত হয়েছে আরও তিনজন, আহত হয়েছে অন্তত চারজন। এই ঘটনাগুলো ইয়েমেনের অসহায় মানুষের জন্য একের পর এক নতুন সংকট বয়ে আনছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে কয়েক সপ্তাহ আগে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, হুতি যোদ্ধারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রুটকে বিপন্ন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হুতিরা এখন পর্যন্ত ১০০-রও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত। হুতিরা এ হামলাকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ বলেই ব্যাখ্যা করেছে।

হুতি নেতা মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমেরিকার এই অপরাধ ইয়েমেনিদের গাজা-সমর্থন দমিয়ে রাখতে পারবে না; বরং তা আরও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।” তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ইয়েমেন-গাজা সংহতির প্রশ্নে হুতিরা তাদের অবস্থান থেকে একচুলও সরতে রাজি নয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হামলায় হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাস ইসা বন্দরে সম্ভাব্য তেল ও গ্যাস নিঃসরণ এক মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) জানিয়েছে, এই বন্দর ও পাইপলাইন ইয়েমেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ — দেশটির ৭০ শতাংশ আমদানি এবং ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা এই রুট দিয়েই আসে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সামরিক অভিযান শুধু হুতিদের প্রতিরোধ কমাবে না, বরং ইয়েমেনের ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরও গভীর করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন লোহিত সাগরের দিকে, যেখানে যুদ্ধ আর বাণিজ্যের টানাপোড়েনে প্রতিদিন ঝরছে সাধারণ মানুষের রক্ত।

Nema komentara