ঈদের পর কেন্দুয়ায় সংঘর্ষ, দুর্ঘটনা ও মৃত্যু—উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া..

Md Humayun avatar   
Md Humayun
পবিত্র ঈদুল আযহার আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত হয়েছে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায়। ঈদের দিন এবং তার পরবর্তী কয়েকদিনে একের পর এক সংঘর্ষ, সড়ক দুর্ঘটনা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ..

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন ও পরবর্তী সময়ে উপজেলায় সংঘটিত একাধিক ঘটনায় অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চারজন। এর মধ্যে রয়েছে দুই শিশু, একজন বয়স্ক ব্যক্তি ও একজন নিরাপত্তাকর্মী।

 

সংঘর্ষে নিহত এক, আহত শতাধিক:

ঈদের চতুর্থ দিনে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের দনাচাপুর গ্রামে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হন আনিছুর রহমান। সংঘর্ষে নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে অনেকেই কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় আগে থেকেই উত্তেজনা ছিল। ঈদের সময় পরিবারের সঙ্গে শান্তিতে সময় কাটানোর বদলে এলাকাবাসীকে পড়তে হয় প্রাণঘাতী সংঘর্ষে।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল দুইজনের: বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এক শিশু ও একজন নিরাপত্তাকর্মী।কেন্দুয়া-নান্দাইল সড়কের মাসকা বাজার এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসচাপায় নিহত হন নজরুল ইসলাম মিন্টু । তিনি মাসকা সোয়েটার ফ্যাক্টরির নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। এর আগে বিকালের দিকে কেন্দুয়া-নেত্রকোনা সড়কে সাউদপাড়া এলাকায় অটোরিকশার ধাক্কায় নিহত হয় ৬ বছর বয়সী শিশু হোসাইন।

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু: একইদিন দুপুরে রাজিবপুর গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ২৭ মাস বয়সী শিশু মাহাদী পুকুরে পড়ে মারা যায়। শিশুটির পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

জনমনে ক্ষোভ, প্রশাসনের উদ্বেগ: ঘটনাগুলো ঘিরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, ঈদের সময় এমন শোকাবহ পরিস্থিতি কেন্দুয়ায় আগে কখনও দেখা যায়নি। তাদের মতে, নিরাপত্তার ঘাটতি, পারিবারিক অসচেতনতা এবং স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবই এই দুঃখজনক ঘটনার জন্য দায়ী।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান: কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান শুক্রবার দুপুরে এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঈদের দিন থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষে আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক মানুষ এবং একজন নিহত হয়েছেন।”তিনি আরও জানান, পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশু ও এক নিরাপত্তাকর্মী মারা গেছেন। পানিতে পড়ে মারা গেছে আরেক শিশু। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “এই ধরনের ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালাচ্ছে। আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মানুষ তাদের উৎসব উদযাপন করুক।”

সচেতনতার তাগিদ :স্থানীয়রা মনে করছেন, এখনই সময় সচেতনতা বৃদ্ধির, সামাজিক সংহতি গড়ার, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করার। না হলে ঈদের মতো আনন্দময় সময়গুলোও হারিয়ে যাবে এমন শোকের খবরের ভিড়ে।

コメントがありません